হাজী সেলিম রোববার দুপুরে ঢাকার ৭ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী প্রাণনাথ।
দুপুরের আগেই তিনটি আবেদন করা হয়েছে হাজী সেলিমের পক্ষে। এর একটিতে আপিলের শর্তে জামিন চাওয়া হয়েছে। যদি কারাগারে পাঠানো হয়, তাহলে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা চাওয়া হয়েছে দ্বিতীয় আবেদনে। আর তৃতীয় আবেদনে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ চাওয়া হয়েছে।
দুদকের করা অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের যে মামলায় হাজী সেলিমের সাজা হয়েছে, সেটি দায়ের করা হয়েছিল ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর, সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরি অবস্থার মধ্যে।
পরের বছর ২৭ এপ্রিল বিশেষ আদালত তাকে দুই ধারায় মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পাশাপাশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগে হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমকে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাজী সেলিম এবং তার স্ত্রী ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালত তাদের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। দুদক তখন সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাই কোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
সেই শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাই কোর্ট বেঞ্চ একটি ধারায় হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে এবং অন্য ধারায় ৩ বছরের সাজা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়। সেই সঙ্গে তাকে এক মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মারা যাওয়ায় বিচারিক আদালতের রায়ে দণ্ডিত হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমের আপিলটি বাতিল করা হয়।
হাজী সেলিম। ফাইল ছবি
পুরান ঢাকার সংসদ সদস্য হাজী সেলিম আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপদেষ্টমণ্ডলীতে রয়েছেন। বিগত কমিটিতে তিনি সদস্য ছিলেন। তার আগে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
তার আত্মসেমর্পণের খবরে বেলা ১২ থেকে আদালত চত্বরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের ভিড় দেখা যায়।
ফজলুল কবির চৌধুরী শিপার নামে লালবাগের এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “তিনি দুর্দিনে আওয়ামী লীগে কাণ্ডারি হিসেবে কাজ করেছেন। তাই মনের টানে এখানে এসেছি।”
ওই ভবনের সামনে বাড়তি পুলিশের উপস্থিত দেখা যায়। কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই এ ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন:
আলোচনার মধ্যেই দেশে ফিরলেন হাজী সেলিম