উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের বাবলা গ্রাম থেকে রোববার সকালে এই তিন জনের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ওই গ্রামের ৩৬ বছর বয়সী গৃহবধূ, তার ১২ বছর বয়সী ছেলে ও ৭ বছর বয়সী মেয়ে।
নরসিংদী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসপি এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামীকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি ও একটি ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, নিহত নারী এলাকায় সেলাইয়ের কাজ করতেন। সকাল ৮টার দিকে এক প্রতিবেশী নারী ওই বাড়িতে আগে তৈরি করতে দেওয়া পোশাক আনতে যান। ঘরের দরজা বন্ধ দেখে কয়েকবার নাম ধরে ডাকাডাকি করে সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না।
পরে দরজার নিচ দিয়ে ঘরের ভেতরে তাকিয়ে মেঝেতে রক্ত দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। এরপর স্থানীয়রা গিয়ে ঘরের জানালা ভেঙে ভেতর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তারা বেলাব থানায় খবর দেন।
এলাকাবাসীর বরাতে বেলাব থানার ওসি সাফায়েত হোসেন জানান, ফোর্স নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এর পরপরই নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান ঘটনাস্থলে যান এবং এরপর দুই ঘরের দরজা খুলে নিহত তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পশ্চিম পাশের মাটির ঘরের মেঝেতে গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ। তার কপাল ও পেটে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দক্ষিণ পাশের মাটির ঘরের খাটে দুই সন্তানের লাশ।
পিবিআইয়ের এসপি এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, “গৃহবধূর স্বামী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রথমে স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে হত্যা করেন। পরে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে ছেলে ও মেয়েকে হত্যা করেছেন।”
বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে ১৫ ইঞ্চি একটি ছুরি ও একটি ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এর আগে থানায় নিহত গৃহবধূর স্বামী বলেছিলেন, ১০/১২ দিন আগে বাড়িতে কয়েকটি গাছ কেটেছিলেন তিনি। এ নিয়ে তখন তার এক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়। এ নিয়ে ওই ভাই তাদের হত্যার হুমকিও দিয়েছিলেন।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইতিমধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। লাশ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে বেলাব থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত নারী এলাকায় কাপড় সেলাইয়ের কাজ করতেন। নিহত সন্তানদের মধ্যে ছেলেটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় এবং মেয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত।