চট্টগ্রাম টেস্টের একাদশ থেকে শরিফুল ইসলাম ছিটকে গেছেন চোট নিয়ে। তার জায়গায় একাদশে ফিরছেন ইবাদত হোসেন। চট্টগ্রামে ভালো করতে না পারলেও সৈয়দ খালেদ আহমেদের ওপর আস্থার কমতি নেই মুমিনুলের।
মিরপুর টেস্ট শুরুর আগের দিন রোববার সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন হলো, এক পেসার নিয়ে একাদশ সাজানোর ভাবনা আছে কিনা। বাংলাদেশ অধিনায়ক সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন।
“জানি না… আমি অধিনায়ক হওয়ার পর আপনারা এক পেসার পেয়েছিলেন কিনা। মনে হয় না, এক পেস বোলার খেলবে। এমনও হতে পারে তিনটাও খেলতে পারে।”
মুমিনুল হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন, তিনি অধিনায়ক হওয়ার পরও এক পেসার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। গত বছর দেশের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে একমাত্র পেসার ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। খণ্ডকালীন কোনো পেসারও ছিল না ওই টেস্টে। ওই সিরিজেই মিরপুর টেস্টে একাদশে একমাত্র স্পেশালিস্ট পেসার ছিলেন আবু জায়েদ চৌধুরি। সঙ্গে জেন্টল মিডিয়াম পেস নিয়ে একাদশে ছিলেন সৌম্য সরকার।
এবার সেই আবু জায়েদ, মুস্তাফিজরা দলেই নেই। চোটের কারণে আগেই ছিটকে গেছেন তাসকিন আহমেদ। চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে হারাতে হয়েছে শরিফুলকে। তারপরও দুই পেসার নিয়ে খেলতে নামছে দল। আছে আরও বিকল্পও। বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ের এমন সমৃদ্ধ চেহারাই দেখতে চান মুমিনুল।
“কোনো একটা জিনিস শুরু করলে মাঝেমাঝে এমন বাধাবিপত্তি আসতে পারে। তাসকিন যতদিন খেলেছে, খুব ভালো বল করেছে। শরিফুলও ভালো অবদান রেখেছে টেস্ট দলে। ওদের জায়গায় যারা খেলবে, তাদের জন্য এটা বিরাট সুযোগ। সেই সাথে আমার মনে হয়, আমার জন্যও একটা সুযোগ, ওদের দেখে নেওয়ার।”
“টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আমি সব সময় চিন্তা করি, আমার এক ঝাঁক পেসার থাকুক, স্বাস্থ্যকর একটা প্রতিযোগিতা হোক। তাই এটা আমার জন্যও সুযোগ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ টেস্ট দলের জন্য কী করতে পারবে, কীভাবে উন্নতি করতে পারবে, এসব আমিও দেখে নিতে পারব।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সবশেষ টেস্টে গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে একাদশে ছিলেন ইবাদত ও খালেদ জুটিই। দুজনের কেউ খুব একটা ভালো বোলিং করতে পারেননি। তবে এখানকার উইকেট মূলত স্পিন সহায়ক হলেও স্কিল থাকলে পেসারদের কার্যকর হওয়ার নজির এখানে আছে। সবশেষ টেস্টেই যেমন বেশ ভালো করেছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলি।
বাংলাদেশের সুইং বোলার আবু জায়েদও এখানে সাফল্যের পথ ঠিকই খুঁজে নিয়েছেন। এই মাঠে নিজের সবশেষ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এখানে এর আগের টেস্টেই শিকার করেছিলেন ৪টি। কিন্তু ছন্দ ও কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ে তাকে স্কোয়াডেই রাখা হয়নি এবার।
গত মার্চ-এপ্রিলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুই টেস্ট খেলে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তার ওই পারফরম্যন্সে ভরসা করেই ইবাদতকে না খেলিয়ে তাকে নামায় দল। কিন্তু দুই জায়গার উইকেট ও কন্ডিশন যে বড় পার্থক্য, তা ফুটে উঠেছে খালেদের বোলিংয়ে। চট্টগ্রাম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০৭ রান দিয়ে তিনি কোনো উইকেট পাননি।
চট্টগ্রামের উইকেটে কোন লেংথে বল রাখতে হবে, তা বুঝে উঠতেই পারেননি খালেদ। লাইন-লেংথ ছিল এলোমেলো, ছিল না কোনো ধার। স্পিনারদের তৈরি করা চাপ অনেক সময়ই সরে যায় তার আলগা বোলিংয়ে।
তবে মুমিনুলের বিশ্বাস, মিরপুরের চেনা আবহে নিজেকে খুঁজে পাবেন খালেদ। অধিনায়ক তাকিয়ে আছেন একাদশে ফেরার অপেক্ষায় থাকা ইবাদত হোসেনের দিকেও।
“আমি সবসময় আশাবাদী থাকতে পছন্দ করি। দক্ষিণ আফ্রিকায় সে অনেক ভালো বল করেছিল, যেটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল। (চট্টগ্রাম টেস্টে) হয়তো ওই অনুযায়ী ভালো করতে পারেনি। লেংথ হয়তো বুঝে উঠতে পারেনি। তবে দেশের ভেতরে বেশিরভাগ সময় আমরা ঢাকায় খেলি। ঢাকায় অনুশীলন করি, প্রচুর ম্যাচ খেলি। আমার কাছে মনে হয়, এই কন্ডিশন ও জানে। নতুন বলে কোথায় বোলিং করবে, পুরান বলে কোথায় বোলিং করবে। আমার মনে হয়, এই টেস্টে ও খুব ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াবে।”
“ইবাদত যদি খেলে, আমার মনে হয়, এটা ভালো একটা সুযোগ। ইবাদতের জন্য, সঙ্গে আমার জন্যও- ওকে কন্টিনিউ করার জন্য বিরাট সুযোগ আমার কাছে।”