রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে দেশে নিত্যপণ্যের বাজারে চলমান অস্থিরতার মধ্যে সোমবার সংগঠনের এক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়।
‘অতিমুনাফা ও প্রতারণার শিকার ভোক্তারা: আইন মানার তোয়াক্কা নাই’ শীর্ষক এ সেমিনারে ক্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, “ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যথেষ্ট নয়। এই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছাড়া কোথাও কথা বলার জায়গা নেই আমাদের।”
তিনি বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সম্ভব নয়। সে কারণেই আমরা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ডিভিশন বা বিভাগ চাই, যেখানে ভোক্তারা তাদের সমস্যার কথা বলতে পারবে। যারা সরকারের হয়ে জণগণের অধিকার রক্ষায় কাজ করবে।”
দেশের প্রতিটি জেলায় ভোক্তাদের সাথে প্রতারণার একটি করে ঘটনা চিহ্নিত করে মামলা করার মাধ্যমে বিষয়টি সরকারের সামনে তুলে ধরার আহবান জানান শামসুল আলম।
তার অভিযোগ, যে ব্যবসায়ীরা শীর্ষ অবস্থানে থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার ‘ব্যবস্থা নিতে পারছে না’।
“তেলের দাম বৃদ্ধির আগে যখন তেল সংকট তৈরি হল, তখন ৫ থেকে ৬ জন ব্যবসায়ী এটার পেছনে ছিল। কিন্তু তাদের নাম পর্যন্ত উচ্চারিত হচ্ছে না।”
শামসুল আলম বলেন, “দেশে অসাধু ব্যবসায়ীর সংখ্যা কম। কিন্তু সৎ ব্যবসায়ীরা এই অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারছে না। তারা অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা নির্যাতিত, নিপীড়িত হচ্ছে।”
আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করে যেন ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করেন, সেজন্য সরকারের নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দেন ক্যাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ চৌধুরী।
সেমিনারে লিখিত বক্তব্যে ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “অসাধু ব্যবসায়ীদের ভিত এতই শক্তিশালী যে সরকারি প্রশাসন যন্ত্র মনে হয় তাদের কাছে অসহায়। এরা টাকার জোরে সরকারি আমলা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিভিন্ন মিডিয়াকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেন।”
এ প্রক্রিয়ায় কোটিপতিদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আগে একই কায়দায় গুঁড়োদুধে ময়দা মিশ্রিত করার হোতাসহ চিনি, সয়াবিন, চাল কেলেঙ্কারির হোতাদের কোনো শাস্তি হয়নি। তারা পর্দার আড়ালে আবার রেহাই পেয়ে যায়।”
ভোক্তারা ‘অসচেতন ও অসংগঠিত’ থাকায় বাংলাদেশকে ভেজাল ও নিন্মমানের খাদ্যের ‘বাজার-পরীক্ষাগারে’ পরিণত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে দাবি করে নাজের হোসাইন বলেন, “মানুষ যা আয় রোজগার করছে তার সিংহভাগই ওষুধ ও চিকিৎসার খরচ যোগাতে চলে যাচ্ছে।”