সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্ষমতাসীন দলের এই আইন প্রণেতাকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান।
বর্তামানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্ডিওলজি বিভাগের একজন চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি আছেন আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপদেষ্টামণ্ডলীর এই সদস্য।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার দুপুরে ঢাকার ৭ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন হাজি সেলিম। বিচারক শহীদুল ইসলাম তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।
কি ধরনের শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাজি সেলিম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন জানতে চাইলে জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, “উনার তো বহুবিধ সমস্যা, আর আদালতই চিকিৎসার বিষয়ে জেলকোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলছে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাজি সেলিম কার্ডিওলজি বিভাগের একজন চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি হয়েছেন, তিনি কেবিনে আছেন।
রোববার শুনানির সময় হাজি সেলিমের আইনজীবীরা তার জন্য কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ও উন্নতমানের চিকিৎসার আবেদন করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় সেলিম কথা বলতে পারেন না, তিনি এখন বাক প্রতিবন্ধী।
শুনানি শেষে হাজি সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ দেন বিচারক।
দুদকের এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর, সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরি অবস্থার মধ্যে।
২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিশেষ আদালত হাজি সেলিমকে দুই ধারায় মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পাশাপাশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগে হাজি সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমকে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাজি সেলিম এবং তার স্ত্রী ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালত তাদের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। দুদক তখন সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজি সেলিমের আপিল পুনরায় হাই কোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
সেই শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাই কোর্ট বেঞ্চ একটি ধারায় হাজি সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে এবং অন্য ধারায় ৩ বছরের সাজা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়। সেই সঙ্গে তাকে এক মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মারা যাওয়ায় বিচারিক আদালতের রায়ে দণ্ডিত হাজি সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমের আপিলটি বাতিল করা হয়।
পুরনো খবর
দণ্ড নিয়ে হাজি সেলিম কারাগারে, এমপি পদের কী হবে?
আইনপ্রণেতা হাজি সেলিম দণ্ড নিয়ে কারাগারে
আলোচনার
মধ্যেই দেশে ফিরলেন হাজী সেলিম
তথ্য
গোপন: হাজী সেলিমের শাস্তি চেয়ে দুদকের আপিল