ক্যাটাগরি

কোনো ছাড় বা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানবে না ইউক্রেইন

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি রাশিয়ার সামরিক বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা হচ্ছে আর কিইভের মনোভাব ক্রমেই আপসহীন হয়ে উঠছে, একই সময় একটি শান্তি চু্ক্তির জন্য তাদের ওপর ভূখণ্ডগত ছাড়ের চাপ আসতে পারে বলে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন ইউক্রেইনের কর্মকর্তারা। 

“অবশ্যই ইউক্রেইনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধাদের মধ্য দিয়েই যুদ্ধ শেষ হবে,” রোববার এক টুইটার পোস্টে বলেছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রি ইয়েরমাক।

কিইভ সফরে গিয়ে প্রতিবেশী পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আনজেই দুদা ইউক্রেইনের প্রতি ওয়ারশর সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। রোববার ইউক্রেইনের পার্লামেন্টে দুদা বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে রাশিয়ার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার দাবি করতে হবে এবং কোনো অঞ্চল ছেড়ে দিতে হলে তা পুরো পশ্চিমের জন্য ‘বড় ধরনের একটি ধাক্কা’ হবে।

ছবি: রয়টার্স

ছবি: রয়টার্স

“উদ্বিগ্ন কিছু কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে, বলেছে যে ইউক্রেইনের উচিত (প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির) পুতিনের দাবি মেনে নেওয়া,” ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে বলে দুদা।  

“ইউক্রেইনের ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধু ইউক্রেইনীয়দেরই আছে,” বলেন তিনি।

পার্লামেন্টের একই সেশনে দেওয়া বক্তৃতায় ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোর বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।  

তিনি বলেন, “যখন আগ্রাসন বন্ধ করা উচিত তখন আধাআধি পদক্ষেপ ব্যবহার করা উচিত নয়।”

দুই নেতার বক্তৃতা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজধানী কিইভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে।

দুদার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ ইউক্রেইনীয়র মৃত্যু হচ্ছে।


যুদ্ধও আমার কাছ থেকে স্বামীকে আলাদা করতে পারবে না: ইউক্রেইনের ফার্স্টলেডি


কেবল ইউক্রেইনেরই নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার আছে: পোলিশ প্রেসিডেন্ট
 

এর মাধ্যমে তিনি সম্ভবত ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মৃত্যুর উল্লেখ করেছেন বলে ভাষ্য রয়টার্সের।

রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেইনের শান্তি আলোচনায় কিইভ পক্ষের প্রধান আলোচক জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পদোইলাক ভূখণ্ডগত কোনো ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা বাতিল করে আশু যুদ্ধবিরতির সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ভূখণ্ডগত ছাড় দিলে রাশিয়ার সেনার অধিকৃত এলাকায় অবস্থান করবে যা কিইভ মেনে নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। 

“(রাশিয়ার) বাহিনীগুলো এই দেশ ছেড়ে অবশ্যই চলে যাবে আর তারপর শান্তি প্রক্রিয়া ফের চালু করা সম্ভব হবে,” শনিবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন পদোইলাক; আশু অস্ত্রবিরতির আহ্বানকে ‘খুব অদ্ভুত’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। 

ছবি: রয়টার্স

ছবি: রয়টার্স

কোনো ছাড় দিলে তা উল্টো বিপদ ডেকে আনবে বলে মনে করেন তিনি। তার ধারণা, লড়াইয়ের বিরতির সুযোগ নিয়ে রাশিয়া আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে।

সম্প্রতি ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন আশু যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন।

মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেইনীয় যোদ্ধাদের চালানো প্রতিরোধ অবসানের পর এরমধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্কে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া। 

রোববার ইউক্রেইনীয় টেলিভিশনে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ভাদিম দেনেশেঙ্কো জানিয়েছেন, জোড়া শহর সিয়েভিয়ারোদোনেস্ক ও লুইসিচ্যাংস্কের আশপাশে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে।