রাশিয়ার সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন কূটনীতিক হয়েও কেন যুদ্ধের জেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই কারণ বন্ডারেভ সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেছেন বিবিসি’র রাশিয়া বিষয়ক সম্পাদক স্টিভ রোসেনবার্গের কাছে।
তিনি বলেন, “এর কারণ হচ্ছে, আমাদের সরকার সেই ফেব্রুয়ারি থেকে যা করছে তার সঙ্গে আমি কোনওভাবেই একমত নই এবং এটাকে সমর্থনও করি না। এর সঙ্গে আমি আর জড়িতও থাকতে চাই না। এ যুদ্ধ রক্তক্ষয়ী, বিচারবুদ্ধিহীন এবং একেবারেই অপ্রয়োজনীয়।
সোমবার সকালে দেওয়া পদত্যাগপত্রে বন্ডারেভ লিখেছেন, ২০ বছরের কূটনৈতিক জীবনে তিনি দেশের বৈদেশিক নীতির নানা মোড় পরিবর্তন দেখেছেন। কিন্তু এই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে যা (আগ্রাসন) শুরু হয়েছে, তাতে নিজের দেশকে নিয়ে এতটা লজ্জায় তিনি আর কখনও পড়েননি।
পুতিনের ইউক্রেইন আগ্রাসনকে ‘অপরাধ’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন তিনি। বন্ডারেভ বলেন, “এটি কেবল ইউক্রেইনের জনগণের বিরুদ্ধেই অপরাধ নয়, রাশিয়ার জনগণের বিরুদ্ধেও গুরুতর অপরাধ।”
কিন্তু ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে বন্ডারেভ মর্মাহত হলেও তিনি বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে তার সঙ্গে সহমত মানুষের সংখ্যা খুব একটা নেই বলেই তিনি মনে করেন।
বন্ডারেভ বলেন, “আমি মনে করি তাদের বেশিরভাগই, সংখ্যাগরিষ্ঠই রাশিয়া সরকারের প্রচারণা এবং উপরমহল থেকে তাদেরকে যা বলা হয় সেটিই তারা অনুসরণ করে।”
“আপনি যখন মন্ত্রণালয়ে কাজ করছেন, সেখানে পদানুক্রম থাকে। সুতরাং, আপনাকে আপনার উপরের কর্মকর্তার কথা মেনেই চলতে হয়। আর বহু বছর ধরেই মন্ত্রণালয় থেকে কোনওরকম সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি অনেকাংশেই উঠে গেছে।”
নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বন্ডারেভ বলেন, তার এই পদক্ষেপ একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। এতে কোনওকিছু পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া, এই পদক্ষেপের ফলে রাশিয়া তাকে এরই মধ্যে ‘দেশদ্রোহী’ ভাবতে শুরু করেছে- এমনটিও মনে করেন বলে জানিয়েছেন বন্ডারেভ।