সোমবার বাইডেন বলেন, তাইওয়ান আক্রান্ত হলে এই দ্বীপদেশটিকে রক্ষায় সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতেও ইচ্ছুক থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
এ কথার মধ্য দিয়ে বাইডেন চীনের কোনওরকম আগ্রাসনের মুখে তাইওয়ানের পাশে থাকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং তাইওয়ান ইস্যুতে মার্কিন সরকারের নীতি থেকে সরে এসেছেন বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। যদিও হোয়াইট হাউজ বলছে, তাইওয়ান নীতি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসেনি।
চীনের আক্রমণের ক্ষেত্রে তাইওয়ানকে রক্ষা করতে সামরিক হস্তক্ষেপ করা হবে কিনা সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ‘কৌশলগত অস্পষ্টতার’ নীতি অনুসরণ করে আসছে।
কিন্তু জাপানের রাজধানী টোকিওয় প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্টত পরিবর্তনের সুরেই কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তাইওয়ান আক্রান্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র একে সামরিকভাবে রক্ষায় প্রস্তুত থাকবে কিনা- সাংবাদিকদের সরাসরি এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, “হ্যাঁ। আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এক-চীন নীতিতে একমত। আমরা এমন চুক্তিতে সই করেছি এবং সব পরবর্তী সব চুক্তিও সেখান থেকেই হয়েছে। কিন্তু শক্তি দিয়ে, কেবলই শক্তি দিয়ে তাইওয়ানকে দখল করে নেওয়া যায়, এমন ধারণা ঠিক নয়।”
“তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীন শক্তি প্রয়োগ করলে তা গোটা অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলবে এবং ইউক্রেইনে যা ঘটেছে, এখানেও তাই হবে,” বলেন বাইডেন। সেক্ষেত্রে তার কথামত কাজ শুরু করতে মার্কিন পররাষ্ট্রবিভাগের মাত্র কয়েকসেকেন্ড লাগবে বলেও জানান বাইডেন।
তবে এমন ঘটনা না ঘটুক বা ঘটানোর চেষ্টা না করা হোক- সেটিই আশা করেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তাইওয়ানকে রক্ষা করা নিয়ে বাইডেন এর আগে অক্টোবরেও একইরকম মন্তব্য করেছিলেন। সে সময়ও হোয়াইট হাউজ বলেছিল, বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের তাইওয়ান নীতিতে কোনও পরিবর্র্তনের ঘোষণা দিচ্ছেন না।
এবারে বাইডেন ইউক্রেইনের সঙ্গে তাইওয়ান ইস্যুর যে তুলনা করেছেন তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে চীন।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, “তাইওয়ান এবং ইউক্রেইন দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। দু’য়ের মধ্যে তুলনা টানা উদ্ভট ব্যাপার। আমরা আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে এক চীন নীতি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ হিসাবে বিবেচনা করে আসছে চীন। ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, চীনা ভূখন্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ তাইওয়ান… এ ব্যাপারে ছাড় বা আপোসের কোনও জায়গা নেই।”
তবে চীন যা-ই বলুক, তাইওয়ান দশকের পর দশক ধরে নিজেদেরকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবেই দাবি করে আসছে।