ছবি: রয়টার্স
মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ফেইসবুকের মূল কোম্পানি
মেটা’র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মিসইনফরমেশন
প্রডাক্ট পলিসি ম্যানেজার অ্যালিস বুডিসাত্রিও এ তথ্য জানান।
ফেইসবুকের নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণেই ভুল তথ্য অপসারণ করা
হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ২০২০ সালের মার্চ
থেকে এ পর্যন্ত ২ কোটি ৫০ লাখের বেশি কনটেন্ট মুছে
দিয়েছি, যা আমাদের কোভিড ও টিকা বিষয়ক তথ্যের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে।”
বাংলাদেশের এ ধরনের কত তথ্য মুছে দেওয়া
হয়েছে- এ প্রশ্নের উত্তরে অ্যালিস বলেন, “দেশভিত্তিক
নির্দিষ্ট তথ্য এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। কারণ তথ্যগুলো ক্রম পরিবর্তনশীল।
আবার কোভিড বিষয়ক ভুল তথ্যের ধারণাও সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়।”
নিজেদের মাধ্যমে ভুল তথ্য রুখতে ফেইসবুক তিন ধরনের ব্যবস্থা
নিয়ে থাকে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, “যেসব
কনটেন্ট ও অ্যাকাউন্ট আমাদের কমিউনিটি স্টান্ডার্ডস ও বিভিন্ন নীতিমালা লঙ্ঘন করে সেগুলো আমরা মুছে দিই।
“আর যেসব কনটেন্ট নীচু মানের, সেগুলো মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ
কমিয়ে দিই আমরা। আর মানুষকে ভুল তথ্যের বিষয় জানাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় ফেইসবুক, যাতে
পোস্টের সাথে নির্ভরযোগ্য তথ্যের সূত্র জুড়ে দেওয়া হয়।”
ভুল তথ্য ঠেকানোর জন্য ফ্যাক্ট-চেকার ও
বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ হওয়ার প্রক্রিয়াও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন মেটা কর্মকর্তা অ্যালিস।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ৮০টি ফ্যাক্ট-চেকিং
সহযোগী প্রতিষ্ঠান ৬০টির বেশি ভাষায় কাজ করে ফেইসবুকের জন্য। ফ্যাক্ট-চেকে
ভুয়া ও ভুল তথ্য হিসাবে উঠে এলে ওই কনটেন্টগুলো নিউজফিডে কম দেখানো হয়, যার ফলে কম
মানুষের কাছে পৌঁছায়।
“যেসব পেইজ ও ডোমেইন অনবরত মিথ্যা
খবর ছড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসাবে মনিটাইজিং
ও অ্যাডভারটিজিংয়ের সুযোগ বন্ধ করে দিই আমরা।”
অ্যালিস বুডিসাত্রিও।
ফেইসবুকের অংশীদার হিসেবে ফ্যাক্ট-চেকার
সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে অ্যালিস বলেন, “আমাদের সব ফ্যাক্ট-চেকার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক
ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্বীকৃত। এই নেটওয়ার্ক প্রতি বছর
কঠোর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যায়ন করে থাকে।
“যাতে ফ্যাক্ট-চেকারদের মেথডোলজি, অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও কনটেন্টের
ধরন বিবেচনায় নেওয়া হয়। সুতরাং একটি স্বাধীন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসে।”
অ্যালিস বলেন, কোনো পোস্ট বা ছবি-ভিডিও’র বিরুদ্ধে
রিপোর্ট করা হলে ফেইসবুক শুরুতে নিজেদের পলিসির সঙ্গে মিলিয়ে নেয়। এটি ঘৃণাসূচক কথা,
নির্যাতনমূলক ও ক্ষতিকারক কি না, তা দেখে।
“যদি মনে হয়, এটা মিসইনফরমেশন হতে পারে, তাহলে সেটাকে আমরা থার্ড
পার্টি ফ্যাক্ট-চেকারদের কাছে পাঠাই। এরপর কনটেন্টের উপর লেবেল দেওয়া বা সেটির ছড়ানো
কমিয়ে দেওয়া হয়।”
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের
কনটেন্ট মুছে দিই নীতিমালা লঙ্ঘনের উপর ভিত্তি করে। হাজার মানুষ রিপোর্ট করলেও নীতি
লঙ্ঘন না হলে আমরা তা মুছে দিই না। আবার নীতিমালা লঙ্ঘন হলে একজন রিপোর্ট করলেও তা মুছে দেওয়া হয়।”
কনটেন্ট মুছতে গিয়ে অনেক সময় ফেইসবুকেরও
যে ভুল হয়, তা স্বীকার করে নেন মেটা কর্মকর্তা অ্যালিস।
“কোনো কোনো সময় ভুল নিশ্চয়ই হতে পারে। এ কারণে আমরা আপিলের সুযোগ
রেখেছি, যাতে কেউ বলতে পারে যে- তার কনটেন্ট ভুল করে মুছে দেওয়া হয়েছে।”