ক্ষতির
তালিকায় আছে প্রায় ২৭০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা; তলিয়ে গেছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর
জমির ফসল; ভেসে গেছে হাজারের বেশি পুকুরের মাছ।
ভারতে
অতিবৃষ্টির ফলে গত ১৭ এপ্রিলের পর জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায়
পানি বাড়তে থাকে। সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, পুরাতন সুরমাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি
বিপৎসীমা অতিক্রম করে। পানির চাপে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে যায় কোথাও কোথাও।
তাছাড়া
অতিরিক্ত পানি বিভিন্ন নদী-তীরবর্তী এলাকায় ঢুকে পুকুর ভেসে যায়; প্লাবিত হয় কিছু শহর,
গ্রাম ও রাস্তাঘাট।
ক্ষতির
তালিকা ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট
কর্মকতারা জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, এবার অকাল বন্যায় এ
জেলায় এক হাজার ১০০ হেক্টর জমির বোরো ধান, আউশের বীজতলা ১৩০ হেক্টর, আউশ ধান ৩০
হেক্টর, সবজি ৭০ হেক্টর, বাদাম ৯৫ হেক্টর তলিয়ে যায়। এসব ক্ষেত এখনও নিমজ্জিত আছে।
এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
জেলায়
এক হাজার ৩১০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মণ্ডল।
সুনীল
বলেন, এতে এক হাজার ১৪৭ জন খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন
কোটি টাকা। এসব খামারের আয়তন ১৭৪ হেক্টর। মাছের পরিমাণ ১৬৮ টন। আর পোনা ভেসে গেছে
প্রায় ৫০ টন।
তবে
আর্থিক বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পাকা রাস্তার।
জেলার
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম জানান, বন্যায়
২৭০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তা বিলীন হয়ে গেছে, কোথাওবা ভেঙ্গে
গেছে, বিটুমিন ও আরসিসি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক জায়গায়। তাছাড়া তিনটি সেতু ও একটি
রাবার ড্যাম ধসে গেছে।
“এতে
প্রায় ৯০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাওর পর
রাস্তাঘাট আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।”
২১
মে পানি নামতে শুরু করেছে।
সদর
উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের নেহার উদ্দিন বলেন, তাদের রাস্তাঘাটে কোমরপানি ছিল।
চলাচল বন্ধ ছিল। এখন পানি নামার সময় ভেঙ্গে যাচ্ছে।
বন্যার
আগে যেখানে গাড়িতে যাতায়াত করা যেত সেখানে এখন নৌকায় চলতে হয় বলে সদর উপজেলার চালবন্দ
গ্রামের মোহাম্মদ আলী জানান।
তিনি
বলেন, “আমাদের বাড়ির পাশে রাবার ড্যামের পাশে দুটি রাস্তা ধসে গেছে। তাছাড়া কয়েকটি
রাস্তা পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে।”
বন্যায়
সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দির্দেশ
দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।