ক্যাটাগরি

ধাপে ধাপে পদত্যাগপত্র লেখার পন্থা

চাকরি ছাড়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। ‘ক্যারিয়ার’য়ে
সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটা অংশ হল এক চাকরি ছেড়ে আরেক চাকরিতে যোগ দেওয়া।

আগের প্রতিষ্ঠান ছেড়ে নতুন প্রতিষ্ঠানে
যাওয়া পেছনে মূল কারণগুলো হয় ভালো বেতন, বড় পদ, বাড়তি সুযোগ সুবিধা, প্রতিষ্ঠানের সুনাম,
যাতায়াত বিষয়ক সুবিধা ইত্যাদি। তবে চাকরিতে যোগ দেওয়ার যেমন কিছু নিয়ম থাকে তেমনি চাকরি
ছাড়ারও নিয়ম আছে। পাশাপাশি থাকে ভদ্রতা ও পেশাজীবী মনোভাব প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা।

ম্যানেজারকে ব্যক্তিগতভাবে জানানো

এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত
প্রতিবেদনে জানানো হয়, পদত্যাগপত্র দেওয়ার আগে সরাসরি ‘রিপোর্টিং ম্যানেজার’কে বিষয়টি
ব্যক্তিগতভাবে জানাতে হবে। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ যতই বন্ধুত্বপূর্ণ হোক, ‘ম্যানেজার’কে
ব্যক্তিগতভাবে জানানো পর একটা ‘ফরমাল ইমেইল’ করতেই হবে। আর সেটাই হবে আপনার ‘রেজিগনেইশন
লেটার’।

খসড়া তৈরি

যুক্তারাষ্ট্রের ‘ক্যারিয়ার কোচ’ ম্যাগি
মিস্তাল বলেন, “প্রথমত, ঠিক যে কারণগুলো আপনাকে চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে অনপ্রেরণা
যুগিয়েছে তার সবগুলো লিখে ফেলতে হবে কাগজে কিংবা ইমেইলে। আপনার সকল অনুভূতি এখানে লিখে
ফেলতে পারেন, কোনো সমস্যা নেই। কারণ এই ‘ড্রাফ্ট’ কারও কাছে পাঠানো হবে না কখনই।”

ফ্লোরিডার এই ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ আরও
বলেন, “মনে রাখতে হবে, চাকরিতে ইস্তফা দেওয়ার চিঠিটা নিজের আবেগ ব্যক্ত করার জায়গা
নয়। তাই এই ‘নকল ড্রাফ্ট’টাই হবে আপনার ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলার উপায়। পাশাপাশি এই খসড়া চিঠি
মনে করাবে কেনো আপনি চাকরি ছাড়ছেন। আর মুল চিঠি লেখার রসদ ও সঠিক শব্দমালাও বেরিয়ে
আসবে এখান থেকেই।”

সাবলীল শব্দ

মিস্তাল বলেন, “আবেগ প্রকাশের পালা শেষ
হলে এবার আসল কাজে আসতে হবে। প্রথমেই চিঠি থেকে বাদ দিতে অপ্রয়োজনীয় প্রতিটি লাইন।
মনে রাখতে হবে, আপনার চাকরি ছাড়ার পেছনের সব তথ্য প্রতিষ্ঠানকে জানানো জরুরি নয়। বরং
যা জানাতে হবে তা হল আপনি ইস্তফা দিচ্ছেন। কেনো ইস্তফা দিচ্ছেন সেটা জানাবেন কি-না
সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, চাইলে জানাতে পারেন।”

“আপনি চলে যাচ্ছেন এই ব্যাপারটায় জোর
দেওয়ার জন্য চিঠিতেই উল্লেখ করে দিতে পারেন আপনার শেষ কর্মদিবসের তারিখ এবং সঙ্গে আপনার
ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমগুলো, যাতে প্রয়োজনে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।”

শূন্যস্থান পূরণে সহযোগিতা

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই চাকরি ছাড়ার একটা
‘নোটিশ পিরিয়ড’ থাকে, যা সাধারণত হয় এক মাস। তবে আপনি যদি মনে করেন আপনার পদে নতুন
যে আসবে তাকে কিছুটা শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে সাহায্য করবেন বা নতুন কর্মী বাছাই করতে সহযোগিতা
করবেন, তবে সেই প্রস্তাব দিতেই পারেন।

মিস্তালের পরামর্শ, “আপনার দায়িত্বে থাকা
কাজগুলো শেষ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া যেতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানের সেই প্রস্তাবে
রাজি না হওয়ার নজিরই বেশি। প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেনো আপনার সেই প্রস্তাবের
কারণে আপনি নিজেই লাভবান হবেন, প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানা হবে ইতিবাচকভাবে।”

ধন্যবাদ দেওয়া

যেদিন শেষ কর্মদিবস হবে সেদিনও একটা শুভেচ্ছাপত্র
দিতে হবে যার মূল বক্তব্য হবে সবাইকে ধন্যবাদ দেওয়া। তবে ইস্তফাপত্রে সাধারণ ধন্যবাদ
দেওয়াটা ভদ্রতা।

মিস্তাল বলেন, “প্রতিষ্ঠানে আপনার অভিজ্ঞতা
তিক্ত হয়ে থাকলে সেই ধন্যবাদটা দায়সারা ধরনের হতে পারে, তবে কখনই ক্ষোভ প্রকাশ করা
উচিত হবে না।”

ইস্তফা দেওয়া শেষ হলে এবার বিদায় নেওয়ার
প্রস্তুতি। সহকর্মীদের জানান আপনার বিদায় নেওয়ার ব্যাপারে। কোনো কাজ যাতে আটকে না থাকে
সেটা নিশ্চিত করুন। অন্যথায় নতুন প্রতিষ্ঠানে গিয়েও আগের প্রতিষ্ঠানের ঝক্কি সামলাতে
হতে পারে যা মোটেই সুখের নয়।

আর শেষ কর্মদিবসে সবাইকে বিদায়ি চিঠি
বা ইমেইল দিয়ে যেতে হবে।

‘ইমেইল সাবজেক্ট’ আর কাকে দেবেন

চাকরির ইস্তফা দেওয়া ইমেইল’য়ের ‘সাবজেক্ট’
হবে ‘রেজিগনেইশন নোটিশ অ্যাজ অফ (তারিখ) – আপনার নাম’ কিংবা শুধু ‘নোটিশ ও রেজিগনেইশন’।

পাঠাতে হবে আপনার সরাসরি ‘রিপোর্টিং ম্যানেজার’কে,
‘সিসি’তে থাকবে ‘এইচআর’ বা মানবসম্পদ বিভাগের সদস্যরা। ‘বিসিসি’তে রাখতে হবে নিজেকে,
যাতে ‘ইমেইল’টি আপনার কাছেও থাকে।

 

আরও পড়ুন

কর্মক্ষেত্রে অসন্তোষ, হতে পারে মানসিক ক্ষতি
 

চাকরি ছাড়ার আগে যা করা উচিত
 

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে থাকা যেসব বিষয় খেয়াল করা জরুরি
 

চাকরির অনিশ্চয়তা বোঝার উপায়
 

চাকরির সাক্ষাৎকারে বাদ পড়ার কারণ
 

যেভাবে বুঝবেন চাকরিটা ছাড়ার সময় হয়ে গিয়েছে