মিরপুর
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন লাঞ্চের পরপর ৩৬৫ রানে
থেমে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো দেড়শ ছাড়ানো ইনিংসে
১৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক।
দ্বিতীয়
দিন শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ৮৮ রান যোগ করে বাংলাদেশ।
আগের
দিনের মতো দ্বিতীয় দিনও সকালের সেশনে বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেন কাসুন রাজিথা ও আসিথা
ফার্নান্দো। দুই পেসারই নিজেদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে বাংলাদেশের ইনিংস আরও বড়
হতে দেননি।
ক্যারিয়ারে
প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নেন রাজিথা, আরেক পেসার আসিথা নেন চার উইকেট। অন্যটি রান
আউট।
৫
উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে দিন শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম আধ ঘণ্টায় মুশফিক ও লিটন ছিলেন সাবধানী।
এরপর মুহূর্তের জন্য হয়তো লিটনের মনোযোগ নড়ে গিয়েছিল। রাজিথার অফ স্টাম্পের বাইরের
বল তাড়ায় ধরা পড়েন স্লিপে। ভাঙে ৫১৩ বল স্থায়ী ২৭২ রানের জুটি।
বল
ও রান- দুই দিক থেকেই টেস্টে এটা বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা জুটি।
২৪৬
বলে ১৬ চার ও এক ছক্কায় লিটন করেন ১৪১ রান।
প্রায়
তিন বছর পর টেস্টে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন টেকেন কেবল ৩ বল। রাজিথার অফ স্টাস্পের বাইরে
পড়ে আরও বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে ধরা পড়েন কিপার নিরোশান ডিকভেলার গ্লাভসে।
ক্যারিয়ারে
প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট পাওয়ার উল্লাসে মাতেন রাজিথা।
তাইজুল
ইসলামকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন মুশফিক। লঙ্কান স্পিনারদের বিপক্ষে অনায়াসে রান তুলে এগিয়ে
যেতে থাকেন তিনি। শর্ট বল দিয়ে তাইজুলের পরীক্ষা নিচ্ছিলেন আসিথা। শেষ পর্যন্ত সফলও
হন তিনি। শরীর তাক করে আসা একটি নিখুঁত বাউন্সার তাইজুলের গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপারের
গ্লাভসে।
দুই
সেঞ্চুরিয়ানের বাইরে একমাত্র দুই অঙ্ক ছোঁয়া ব্যাটসম্যান তাইজুল করেন ১৫। মুশফিকের
সঙ্গে তিনি গড়েন ৪৯ রানের মহামূল্য জুটি।
পরের
ওভারে আরেকটি বাউন্সারে সৈয়দ খালেদ আহমেদের উইকেট নেন আসিথা। একাদশ ব্যাটসম্যান ইবাদত
হোসেনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মুশফিক। তবে প্রায় সব ফিল্ডার সীমানায় রেখে তার বাউন্ডারির
পথ বন্ধ করে দেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক।
ইবাদতের
ব্যাট হাত মোটেও ভালো নয়। তাই সুযোগ থাকলেও সিঙ্গেল নিতে পারছিলেন না মুশফিক। উইকেটে
শেষ জুটি বলে লাঞ্চ ৩০ মিনিট পিছিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময়টা কোনোমতে কাটিয়ে দেন মুশফিক
ও ইবাদত। তবে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই দুই রান নেওয়ার চেষ্টায় ইবাদতের রান আউট দিয়ে
ভাঙে তাদের প্রতিরোধ।
সঙ্গীর
অভাবে চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরির পানে ছোটা হয়নি মুশফিকের। ৫২৬মিনিটের ম্যারাথন ইনিংস
শেষে ফেরেন হতাশা নিয়ে।
একাদশ
ব্যাটসম্যানের শূন্য দিয়ে নিজেদের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড স্পর্শ করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়বারের
মতো টেস্টে এক ইনিংসে ছয় ব্যাটসম্যান আউট হন রানের খাতা খোলার আগে।
তবে
মুশফিক ও লিটন সেঞ্চুরি করায় একটি বিশ্ব রেকর্ডও হয়ে যায়। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে
এই প্রথম একই ইনিংসে ছয় শূন্যর পাশে দেখা মিলল দুটি সেঞ্চুরির।
ছয়
শূন্য থাকা ইনিংসে আগের সর্বোচ্চ ছিল কেবল ১৫২। সেটা ছাড়িয়ে বাংলাদেশ নিয়ে গেল ৩৬৫
পর্যন্ত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস:
(আগের দিন ২৭৭/৫) ১১১.২ ওভারে ৩৬৫ (মুশফিক ১৭৫*, লিটন ১৪১, মোসাদ্দেক ০, তাইজুল ১৫,
খালেদ ০, ইবাদত ০; রাজিথা ২৮.২-৭-৬৪-৫, আসিথা ২৬-৩-৯৩-৪, জয়াবিক্রমা ৩৮-৯-১০৮-০, রমেশ
১৪-০-৫৩-০, ধনাঞ্জয়া ৬-০-২৭-০, করুনারত্নে ৪-১-৮-০)