মূলত মহানগরের উত্তর ও দক্ষিণ এবং জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ
ঘিরেই বেশি তোড়জোড় চলছে। পদ প্রত্যাশীরা ধর্না দিচ্ছেন ‘বড়দের’ কাছে, চলছে যোগাযোগ।
আর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, এবারের সম্মেলনের পর নতুন কমিটিতে তরুণ
নেতৃত্বই প্রাধান্য পাবে।
৩০ মে নগর যুবলীগের সম্মেলনের ভেন্যু কিং অব চিটাগাং কমিউনিটি সেন্টারে
ঘিরে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কেন্দ্রীয় নেতারা চট্টগ্রামে এসে থাকবেন র্যাডিসন
ব্লু চট্টগ্রাম বে হোটেল, এরইমধ্যে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে হোটেলের সামনের শহীদ
সাইফুদ্দিন খালেদ সড়ক।
চট্টগ্রামে যুবলীগের কমিটিতে পদপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগের
শীর্ষ নেতৃত্বের অনুসারীরা প্রাধান্য পেয়ে আসছেন বহু বছর ধরেই। তবে এবার ঢাকায় গিয়ে
যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পদ প্রত্যাশীদের ধর্না পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “সম্মেলনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। দ্বিতীয় অধিবেশনে সিদ্ধান্ত
হবে, কারা আসবে নতুন কমিটিতে। পুরনো যারা যুবলীগ করেছেন, তারা অবশ্যই থাকবেন।
“আর যারা ছাত্রলীগ করা, তাদের কাজের মূল্যায়ন করা হবে। নতুন-পুরনো মিলিয়েই
কমিটি হবে। যার যার যোগ্যতা অনুসারে পদ পাবে।”
নগর যুবলীগের সর্বশেষ কমিটি হয়েছিল ২০১৩ সালে। সেই কমিটি আহ্বায়ক মহিউদ্দিন
বাচ্চু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আশা করি একটি সফল সম্মেলন আয়োজন করতে পারব।
সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আসবে।
“যারা অতীত দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন এবং ছাত্রলীগে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন,
তাদের নিয়েই কমিটি হবে বলে প্রত্যাশা।”
চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর
সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক
মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে
উপস্থিত থাকবেন।
যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ নাঈম সম্মেলনের প্রস্তুতি দেখতে একাধিকবার
চট্টগ্রামে এসেছেন গত এক মাসে। গত দুদিনে তাকে ঘিরে পদপ্রত্যাশীদের উপস্থিতি ছিল চোখে
পড়ার মত।
যুবলীগের তিন ইউনিটের মধ্যে নগর কমিটির সভাপতি পদের জন্য ৩৫ জন এবং সাধারণ
সম্পাদক পদের জন্য ৭০ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম আর আজিম,
নগর যুবলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক সুমন ও দিদারুল আলম চৌধুরী,
কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ পাল দেবু,
এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুরনজিৎ বড়ুয়া লাবু, যুবলীগ নেতা হেলাল
উদ্দিন, আরশেদুল আলম বাচ্চু, আবদুল মান্নান ফেরদৌস, মোহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন, সুমন দেবনাথ
ও হাবিবুর রহমান তারেক।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম
রনি ও মো. সালাউদ্দিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক আশিকুন্নবী চৌধুরী, পলিটেকনিক
ছাত্রলীগের সাবেক জিএস প্রকৌশলী আবু মো. মহিউদ্দিন, কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন, এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ
নেতা ইলিয়াস হোসেন ও কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ইয়াছির আরাফাতের নাম
আলোচনায় আছে।
সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি অন্য পদগুলোর জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা
নেওয়া হয়েছে। তবে সম্মেলনে শুধু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা হতে পার। অথবা
সম্মেলনের পর কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে জানান যুবলীগ নেতারা।
উত্তর-দক্ষিণে দশক
পেরিয়ে সম্মেলন
২৮ মে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন হবে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে।
পরদিন হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হবে উত্তর জেলার সম্মেলন।
২০১২ সালে উত্তর জেলার সর্বশেষ কমিটি হয়। এরপর ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। এবার
উত্তর জেলায় সভাপতি পদে ৯ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন প্রার্থী হয়েছেন।
উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবলীগের
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম রাশেদুল আলম, উত্তর জেলা
যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান স্বপন, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি
রাজিব উল আহসান সুমন ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির হায়দার করিম
বাবুল।
সাধারণ সম্পাদক পদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু
তৈয়ব, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনজুর আলম, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা
যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু, রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ
ফরিদ, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাশেদ খান মেনন, সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা ইউপি
চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, এসএম আল নোমানসহ আরও অনেকে।
দক্ষিণ জেলায় সবশেষ কমিটি হয়েছিল ২০১০ সালে। এবার সভাপতি পদে ১৩ জন ও সাধারণ
সম্পাদক পদে ৩৯ জন প্রার্থী।
তাদের মধ্যে সভাপতি পদের প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন বোয়ালখালী পৌর
মেয়র জহিরুল ইসলাম জহুর, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাবেক
আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফারুক, নাসির উদ্দিন মিন্টু, মাঈন উদ্দিন চৌধুরী, নুরুল আমিন, চন্দনাইশ
যুবলীগের আহ্বায়ক তৌহিদুল আলম, এমএ রহিম।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আমিন,
আবদুল হান্নান লিটন, মোহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, রাজু দাশ হীরু, মাহাবুবুল
আলম, এস এম আজিজ ও জাহেদুল ইসলাম।