পিয়ংইয়ংয়ের
সুনান এলাকা থেকে বুধবার স্থানীয় সময় খুব সকালে এ তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় বলে সিউলের
কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
এ
ক্ষেপণাস্ত্র তিনটির মধ্যে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও থাকতে পারে
বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ক্ষেপণাস্ত্র
তিনটি ছোড়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
তার এশিয়া সফর শেষ করেন। যাওয়ার আগে তিনি উত্তর কোরিয়াকে ঠেকাতে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার
অঙ্গীকারও করেছেন।
উত্তর
কোরিয়া এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অনেকগুলো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা
চালাল।
জাপান
জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া বুধবার অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে; তবে এই সংখ্যা দুইয়েরও
বেশি হতে পারে।
এর
মধ্যে প্রথমটি ৫৫০ কিলোমিটারের মতো উচ্চতায় উঠে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম
করে, আর দ্বিতীয়টি সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠলেও পাড়ি দিয়েছে প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার,
বলেছেন জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নোবুও কিশি।
উত্তর
কোরিয়ার এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ অ্যাখ্যা
দিয়ে তিনি বলেন পিয়ংইয়ংয়ের এ পদক্ষেপ ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাপানের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা
ও শান্তিকে হুমকিতে ফেলবে’।
বুধবার
দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা পরিষদ উত্তরের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর ডাকা এক বৈঠকে এ ক্ষেপণাস্ত্র
পরীক্ষাকে ‘গুরুতর উস্কানি’ অভিহিত
করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।
উত্তর
কোরিয়ার সর্বশেষ এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
বাইডেন এশিয়ায় ছিলেন; প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মহাদেশটিতে প্রথম সফরে তিনি জাপান ও দক্ষিণ
কোরিয়ায় ৫ দিন কাটান।
বাইডেনের
এই সফরের সময়ই উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ
কোরিয়ার কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
দক্ষিণ
কোরিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের সময় দুই দেশের প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ার একের
পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পাল্টায় বৃহত্তর সামরিক মহড়া এবং প্রয়োজন পড়লে ওই অঞ্চলে
যুক্তরাষ্ট্রের আরও ‘কৌশলগত সম্পদ’ মোতায়েনের
ব্যাপারে সম্মত হন।
বাইডেন
সেসময় বলেন, “উত্তর কোরিয়া যা-ই করুক, যুক্তরাষ্ট্র তার জন্য প্রস্তুত।”
উত্তর
কোরিয়ার এ তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এমন এক সময়ে হল যখন দেশটি কোভিডের একটি কথিত
প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে।
বিশ্বের
যে দুই-একটি দেশ এখনও কোভিড টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেনি, উত্তর কোরিয়া তার অন্যতম।
দেশটির
১০ লাখেরও বেশি মানুষের অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, পিয়ংইয়ং এ অসুখকে বলছে ‘জ্বর’। এতে এপ্রিলের শেষ থেকে এ পর্যন্ত ৬৮ জনের বেশি
মানুষের মৃত্যুর খবরও জানা গেছে।
এর
আগে, চলতি মাসের ১২ তারিখেও উত্তর কোরিয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল, সেদিনই
দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উন কোভিড প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় দেশজুড়ে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছিলেন।
উত্তর
কোরিয়ার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া, কিন্তু
এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে পিয়ংইয়ংয়ের সাড়া মেলেনি।