ঝিটকা-গোপীনাথপুর-বাল্লা-পাটুরিয়া
সড়ক এবং হোগলাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে কাঞ্চনপুর
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রূপক জানান।
বুধবার
সকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ইউনিয়নে কয়েক বছরের অব্যাহত
ভাঙনে ১৩টি মৌজার ১২টিই পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এখন শুধু গৌড়বোরদিয়া মৌজা অবশিষ্ট
রয়েছে।”
“গত
দুই বছরে পদ্মার ভাঙনে শত শত বিঘা জমি ও কয়েকশ বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর
কুশিয়ারচর ও মালুচি এলাকায় শতাধিক বাড়ি ভেঙে গেছে। এবার
কোর্টকান্দি সবচেয়ে বেশি ভাঙছে।“
ইউপি
চেয়ারম্যান আরও বলেন, এ ছাড়া মুহম্মদপুর বৌদ্ধকানিও পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সাথে ভাঙন
শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে কয়েকটি বাড়ি ও বিঘা বিঘা জমি পদ্মায় বিলীন হ’য়ে গেছে। দুটি
কলাবাগানের আংশিক পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।
কোর্টকান্দি
গ্রামের বৃদ্ধ হাশেম মল্লিক (৭০) বলেন, “এর আগে আরও চারবার গাঙ্গের ভাঙনে ঘরবাড়ি হারায়ে
এই গ্রামে আইসি। আর কয়দিনই বাঁচপো? মরার আগে এই বাড়িডাও মনে হচ্ছে আর থাকবার পারুম
না। সরকার যদি এই ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা করত, তাইলে আর ভাঙত না।”
কাঞ্চনপুর
ইউনিয়নের সাবেক সদস্য কাঞ্চন মেম্বার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ১০
বিঘা জমি পদ্মায় বিলীন হইয়া গেছে। বর্ষার শুরুতে যদি
দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে অনেকের বাপ-দাদার বসতভিটা নদীগর্ভে
হারিয়ে যাবে। তাহলে তাদের আর মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না।”
কোর্টকান্দি
গ্রামের জবেদা বেগম (৫০) বলেন, “এর আগে একবার বাড়ি ভাঙছে। ভাঙার পর বাড়ি করছি তাও
ভাইঙ্গা যাইতেছে। আমরা গরিব, ছেলে রিকশা চালায়। এবার ভাঙলে যামু কই। সরকার যেন
ভাঙা ফিরাইতে ব্যবস্থা নেয়।”
একই
গ্রামের জরিনা বেগম (৩৮) বলেন, “এর আগে তিন ভাঙা দিছে। মাইনষে থাকতে দিছে, সে জায়গাও ভাইঙ্গা
যাইতেছে। স্বামী নাই, মেয়ে নিয়া থাহুম কই?“
উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কাঞ্চনপুর
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের
নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার
অনুরোধ করব।
জেলা
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইনুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ও
গোপীনাথপুরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। হরিরামপুরে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে বরাদ্দের জন্য
মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বুধবার মিটিংও চলছে। অনুমোদন
পেলেই কাজ শুরু করতে পারব।”