বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের ‘গা জ্বলছে’ ঠিকই, তবে তা পদ্মা সেতু হয়ে গেছে বলে নয়, এই সেতু নির্মাণের নামে অর্থ ‘লুট’ হয়েছে বলে।
তিনি বলেন, “আমাদের গায়ে নাকি জ্বালা হচ্ছে! গায়ে জ্বালা তো হচ্ছে। গায়ে জ্বালা হচ্ছে পদ্মা সেতু বলে নয়, আমাদের গায়ে জ্বালা হচ্ছে যে, পদ্মা সেতু থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে ওরা বিদেশে সম্পদ করছে- এখানেই আমাদের গায়ে জ্বালা হচ্ছে। কারণ এটা আমাদের টাকা, আমাদের কষ্টার্জিত টাকা।”
পদ্মা সেতু হওয়ায় বিএনপির বুকে ‘বড় জ্বালা’: কাদের
দক্ষিণ জনপদের যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন আনতে যাওয়া পদ্মা সেতু নির্মাণে তিন থেকে চার গুণ বেশি ব্যয় করা হয়েছে বলে দাবি করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, “আমাদের সরকার তো এখন গদগদ হয়ে গেছে। সারাক্ষণ এখন শুধু পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু নিয়ে বলছে। পদ্মা সেতু তো কারও পৈত্রিক সম্পত্তি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে না। পদ্মা সেতু এদেশের মানুষের পকেটের টাকা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।
“সমস্যাটা কোথায়? যেটা করতে লাগত ১০ হাজার কোটি টাকা; সেটা তৈরি করা হচ্ছে এখন ৩০ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে।”
রাজধানীর মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “মিরপুর থেকে যদি দেখেন কিছুক্ষণ পর পর স্টেশন, এর কোনো প্রয়োজন নেই। আগারগাঁওতে একটা, তারপরে শেওড়াপাড়ায় একটা, তারপরে এসে সংসদ ভবনের ওখানে আরেকটা, এরপর ফার্মগেইটে একটা।
“এত কাছাকাছি স্টেশন পৃথিবীর আর কোথাও দেখিনি। কারণ কী? একটাই যে, অনেক টাকা পাওয়া যাবে। এদের লক্ষ্য হচ্ছে দুর্নীতি, এদের লক্ষ্য হচ্ছে লুট, এদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে লুটে নিয়ে যাওয়া।”
মেগা প্রকল্পের নামে সরকার দেশকে ‘ঋণগ্রস্ত’ করে ফেলেছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “আমাদের দেশকে ঋণের গভীরে নিয়ে গেছে। আমরা পুরোপুরি ঋণগ্রস্ত হয়ে গেছি। আমরা বুঝতে পারছি না, আমরা চাকচিক্য দেখে অনেকে মনে করছি কত কী…।”
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এদেরকে (ক্ষমতাসীন) প্রতিরোধ যদি আমরা না পারি, তাহলে আমরা আমাদের রাষ্ট্রের জাতির অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারব না।”
‘কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জিয়া পরিষদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এই সঙ্কলন গ্রন্থ জিয়া পরিষদের পক্ষে প্রকাশ করেন অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ৫০০ টাকা।
আয়োজক সংগঠনের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “জিয়া পরিষদকে অনুরোধ জানাব- আপনারা দয়া করে গবেষণার কাজগুলো করার চেষ্টা করেন এবং ইয়াং ব্লাড সংগঠনে নিয়ে আসুন। আমরা যারা পুরনো হয়ে গেছি, আমরা অনেক কিছুই পারি না কিন্তু ইয়াং যারা আছেন তারা অনেক কিছু পারেন, তাদেরকে দায়িত্ব দেবেন এবং দেখবেন তারা অনেক বেশি কাজ করতে পারবেন এবং গতিশীলতা আনতে পারবে।”
জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক এম সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম; অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক মুজিবুর রহমান হাওলাদার, অধ্যাপক আবু জাফর খান, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন ও আবদুল্লাহ হিল মাসুদ।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আকন্দ মামুন, অধ্যাপক মইনুল হক, অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস, খান মো. মনোয়ারুল ইসলাম, খন্দকার শফিকুল হাসান রতন, এনামুল ইসলাম এনাম, মোস্তফা কামাল পাশা, রবিউল ইসলাম, জাহেদুল আলম হিটো, রিয়াজ উদ্দিন নসু।