টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ইনিংস বাংলাদেশের জন্য হয়ে উঠেছে বিভীষিকা। সবশেষ ২ বছরে একবারও নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি বাংলাদেশ। গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৮৪.৪ ওভার ব্যাট করতে পেরেছিল, সেই ম্যাচেও হেরেছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সবশেষ টেস্ট সিরিজে দুই ম্যাচেই নিজেদের শেষ ইনিংসে নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। বিব্রতকর সব রেকর্ড গড়ে গুটিয়ে গিয়েছিল ৫৩ ও ৮০ রানে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে বৃহস্পতিবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ৩৪ রানে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। প্রথম চার ব্যাটসম্যান ফিরে গেছেন ২৩ রানে।
এমন পরিস্থিতি থেকে অনেকবারই ধসে গেছে বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং লাইনআপ। শ্রীলঙ্কার দুই পেসার কাসুন রাজিথা ও আসিথা ফার্নান্দো যে বোলিং করছে এবং তাদের সামলাতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, তাতে আরেকটি বিব্রতকর হারের শঙ্কা জেগেছে।
চতুর্থ দিনের খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বললেন, লঙ্কান পেসারদের সাফল্য ও সতীর্থদের ব্যর্থতায় দুটি বিষয় তার চোখে পড়েছে।
“আমাদের প্রয়োগ ভালো ছিল না (ব্যাটিংয়ে)। আর ওদের সিমারদের থেকে আমাদের সিমাররা ভালো জায়গায় বল কম করেছে।”
প্রতিপক্ষের সিমাররা ভালো জায়গায় টানা বোলিং করে যাওয়ায় চ্যালেঞ্জ তাই ভীষণ কঠিন। তবে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ২৪ রানের ধংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েই তো সৌধ নিমার্ণ করেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। এবারও জুটি গড়ার চেষ্টা করছেন তারা।
তারা সফল হবেন কি না, সময়ই বলে দেবে। তবে সাম্প্রতিক ব্যর্থতার কারণ খোজার চেষ্টা করলেন সাকিব।
“পরিস্থিতিটা কঠিন আমাদের জন্য। উইকেট অত বেশি কঠিন না হলেও,,,আসলে দুই বা আড়াই দিন যখন আপনি ১৬০-১৭০ ওভার ফিল্ডিং করবেন এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ দিনে এসে একটু কঠিন তো হয়ই। খেলোয়াড়রা হয়তো একটু ক্লান্ত। কারণ দুইটা ম্যাচই পাঁচদিনের শেষ সময় পর্যন্ত যাচ্ছে হয়তো। যদি কালকে আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারি। সেদিক থেকে চিন্তা করলে হয়তো, খেলোয়াড়রা একটু ক্লান্ত।”
“এরকম পরিস্থিতিতে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের জন্য ব্যাটিং করা কঠিন। ওই চাপটা আমরা সামলাতে পারিনি এবং শেষ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ দলে এই সমস্যাটা হচ্ছে। আমি যখন দলে ছিলাম না তখনও এটা দেখেছি, আবার আমি আছি এখনও হচ্ছে। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা অনেকবারই ব্যর্থ হয়েছি নিকট অতীতে। ওই জায়গাতে উন্নতির সুযোগ ছিল। আজকেও আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এখনও যেহেতু শেষ হয়ে যায়নি, শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শেষ বলাটা ঠিক না।”
চতুর্থ দিন শেষে ১০৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ম্যাচের যা পরিস্থিতি এখান থেকে বাংলাদেশের জয়ের বাস্তবিক কোনো সুযোগ নেই। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় এখন লড়াই মূলত ম্যাচ বাঁচানোর। সেখানে ব্যাট হাতে বড় ভূমিকা রাখতে হতে পারে বোলিংয়ে ৫ উইকেট পাওয়া সাকিবের।
তিনি মনে করেন, এই পর্যায়ে চাপ সামলানোই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অতীতে যা অনেক সময়ই করতে পারেননি তারা।
“এই পরিস্থিতিগুলো কঠিন থাকে। চতুর্থ ইনিংস যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই কঠিন পরিস্থিতি। মাথার ভেতর তখন অনেক কিছু কাজ করে। ম্যাচের অনেক ছবিও থাকে। ওই চাপগুলো সামাল দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেগুলো আমরা পারছি না। আামার মনে হয়, নির্দিষ্ট খেলোয়াড়রাই বলতে পারবে তারা কী অনুভব করছে।”