নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বুধবার ইসির এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, সিসি ক্যামেরা ভাড়া নিয়ে কেন্দ্রে বসানোর ব্যবস্থা করবেন তারা।
এ ছাড়া কুমিল্লার মত ছয় পৌরসভার ক্ষেত্রেও ইভিএম ‘কাস্টমাইজেশন’ করার সময় প্রার্থীদের কারিগরি প্রতিনিধিদের রাখার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন।
আগামী ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিনই গোপালগঞ্জ, মোকসুদপুর, সিলেটের বিয়ানীবাজার, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হবে।
কুমিল্লার সিটি ভোটে সব কেন্দ্র ও ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরা রাখার সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছিল ইসি। সেখানে আট শতাধিক এবং ছয় পৌরসভায় নয় শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসবে জানিয়ে অশোক কুমার বলেন, ইতোমধ্যে সেজন্য দরপত্রও দেওয়া হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, কুমিল্লা সিটি ও ছয় পৌরসভায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। এর পর প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। ভোটের আগে ইভিএম ‘কাস্টমাইজেশনের’ জন্য প্রার্থী বা তার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকার সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে জানান অশোক।
‘কাস্টমাইজেশন’ কী?
সিটি ও পৌরসভায় ভোট হবে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে। প্রতিটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীদের নাম ও প্রতীক সম্বলিত ব্যালট ইউনিট থাকবে ইভিএমে।
নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের ভোটারদের বায়োমেট্রিক ডেটাসহ ভোটার তালিকার তথ্য, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্যও ইসি অনুমোদিত প্রোগ্রামের মাধ্যমে অডিট কার্ড, পোলিং কার্ড, এসডি কার্ডে সংরক্ষণ করা হবে। সেই কার্ড থেকেই তথ্য নিয়ে মিলিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পর্কিত সব রেকর্ড রাখবে ইভিএম।
একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র বা ভোটকক্ষের ইভিএমের জন্য নির্দিষ্ট তথ্যের কার্ড প্রস্তুত করাকেই বলা হচ্ছে ‘কাস্টমাইজেশন’।
কাস্টমাইজেশনের সময় প্রার্থী বা প্রার্থীর প্রতিনিধিদের রাখার সুযোগ আছে আইনে। এই সুযোগ ইভিএম নিয়ে আস্থা তৈরিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছে কমিশন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম কাস্টমাইজেশনের সময় উপস্থিত থাকতে আগ্রহী প্রার্থীরা বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার মধ্যে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করলে প্রার্থী বা তার মনোনীত ‘কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন’ প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে পারবেন।
কুমিল্লা সিটি ভোটের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, প্রতিনিধির নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে ওই আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোটগ্রহণে এক যুগ আগে ইভিএম ব্যবহারের শুরু থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে হলেও তার ঘোর বিরোধী বিএনপি।
বুধবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগের একদল শিক্ষক, গবেষক ও প্রযুক্তিবিদ, নির্বাচন কমিশনের ইভিএম সংশ্লিষ্ট সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের নিয়ে এ বিষয়ে মতবিনিময় করে ইসি।
সভার পর অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং এ কায়কোবাদ সাংবাদিকদের বলেন, ইসির ইভিএম দেখে তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন যে এতে কারসাজির কোনো ‘সুযোগ নেই’।
পুরনো খবর:
ইসির ইভিএমে কারসাজির সুযোগ নেই: জাফর ইকবাল
কুমিল্লায় ভোট কেন্দ্রে-ভোট কক্ষে থাকবে সিসি ক্যামেরা
কুসিক নির্বাচন: ইভিএম কাস্টমাইজেশনে প্রার্থীদের ঢাকায় আমন্ত্রণ