আইপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে বুধবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরের বিপক্ষে ৫৮ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস অধিনায়ক রাহুল। ইনিংস শুরু করে তিনি আউট হন শেষের আগের ওভারে। কিন্তু ২০৮ রান তাড়ায় দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দিতে পারেননি। মাঞ্জরেকার মনে করেন, লম্বা সময় ব্যাটিং করার চেয়ে রাহুলের আরও দ্রুত রান করা উচিত ছিল।
ক্রিকেট ওয়েবসসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর ‘টি-২০ টাইম আউট’ অনুষ্ঠানে মাঞ্জরেকার মন্তব্য করেন, আইপিএলে অধিনায়ক রাহুল দলের মূল ব্যাটসম্যান হওয়ার দায়িত্বের জন্য স্বভাবগতভাবে উপযুক্ত নন। এক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রোহিত শর্মার কথা।
“আমরা রাহুলের খেলা যথেষ্ট দেখেছি। এখন আমরা জানি, সে কখন একজন খেলোয়াড়, অধিনায়ক, দলের মূল খেলোয়াড় হয়ে উঠবে…আমি বলতে চাইছি, বিরাট কোহলি এই ধরনের দায়িত্ব পছন্দ করে। ধোনি এটা পছন্দ করে। আমি মনে করি, এই মৌসুম বাদ দিলে রোহিত শর্মাও এই ধরনের দায়িত্ব পছন্দ করে। তবে রাহুল হয়তো এই ধরনের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য স্বভাবগতভাবে উপযুক্ত নয়। তাদের শক্তি-সামর্থ্য একটু অন্য ধরনের, হয়তো রাহুল তা নয়।”
“একজন কোচ হিসেবে আমি তার মাথায় বিষয়টি গেঁথে দিতে চাই যে, ‘আমি আশা করছি না যে তুমি ম্যাচ জেতাবে। তুমি শুধু মাঠে নামো এবং মজা করো। তখন দেখবে, ফলাফল আসতে শুরু করেছে।’ তাই আমি মনে করি, আইপিএলের চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার স্ট্রাইক রেট অনেক ভালো। কারণ সেখানে সে কেবলই অনেক ব্যাটসম্যানের মধ্যে একজন। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং অন্যদের সঙ্গে সেখানে খেলে সে, তাই সেখানে সে নিজেকে মেলে ধরতে পারে।”
গত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে, ভারতের হয়ে খেলার সময় রাহুল যতটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন, তার চেয়ে অনেক বেশি ইনিংস টেনে নেওয়ার ভূমিকা পালন করেন আইপিএলে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট যেখানে ১৪২.৪৯, আইপিএলে গত চার মৌসুমে সেটি ১৩৪.৫৩।
বেঙ্গালোরের বিপক্ষে রাহুলের ইনিংসটি দেখে তার পাঞ্জাব কিংসে থাকার সময়ের কথা মনে পড়ছে মাঞ্জরেকারের।
“রাহুলের এই ইনিংসটির মতো এমন কিছু আমরা আগেও দেখেছি, যখন সে পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক ছিল। তারা (পাঞ্জাব) রান তাড়া করতে পারত না। রাহুল শেষ পর্যন্ত খেলত, তারা হয়তো তিন-চারটা উইকেট হারাত এবং (নিকোলাস) পুরান ব্যাটিংয়ে আসত। এখানেও একই চিত্র। যেমন, (লক্ষ্ণৌর ইনিংসে) এভিন লুইস, ক্রুনাল পান্ডিয়া শেষ দুই ওভারে ব্যাটিংয়ে এসেছিল। এর একটু আগে (মার্কাস) স্টয়নিস। তাই তাদের এগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।”
এবারের আইপিএলে রাহুলের ব্যাটিংয়ে দেখা গেছে অদ্ভুত বৈপরীত্য। আগে ব্যাটিং করে আট ইনিংসে তার রান ৪২৫। গড় ৮৫ আর স্ট্রাইক রেট ১৪৮.৬০। কিন্তু রান তাড়ায় সাত ইনিংসে রান রান কেবল ১৯১। এখানে গড় মাত্র ২৭.২৮, স্ট্রাইক রেট ১১৩.০১।