আরও অনেকের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে আট কেজি সোনাসহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মী গ্রেপ্তারের ঘটনাটি পৃথকভাবে বিমান ও মন্ত্রণালয় তদন্ত করবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার (বিএফসিসি) পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এসময় বারবার কেন বিমানে এ ধরনের স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনা ধরা পড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “শুধু বিমান নয়, বেসরকারি প্লেনে অনেক সময় এই ধরনের চোরাচালান ধরা পড়ে।”
আব্দুল আজিজ আখন্দ নামে গ্রেপ্তার ওই বিমান কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আর পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
বুধবার বিএফসিসির প্যান্ট্রিম্যান আজিজকে আট কেজি স্বর্ণসহ আটক করে ঢাকা কাস্টমস হাউজের প্রিভেন্টিভ বিভাগ।
তাকে আটক করতে গিয়ে বিমানকর্মীদের বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা কাস্টমস হাউসের উপ কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) সানোয়ারুল কবীর। এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে বিএফসিসি পরিদর্শনে যান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব।
পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ওই কর্মচারী উড়োজাহাজে যাননি, বিমানের কেউ তাকে ওই স্বর্ণগুলো দিয়েছে। বিমানের আরও অনেকে এরসঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ঘটনাটি পৃথকভাবে তদন্ত করবে বিমান ও মন্ত্রণালয়।”
শাহজালাল বিমানবন্দরে উত্তর পাশে বিমান বাংলাদেশের ক্যাটারিং সেন্টার। যেখানে বিমানের ফ্লাইটের জন্য খাবার রান্না করা হয়। সেই খাবার ফ্লাইটে সরবরাহ করা হয়।
বিএফসিসি থেকে বিমানবন্দরের এপ্রোন এলাকায় প্রবেশ করা যায়। এ শাখার কর্মীদের বিমানবন্দরে ঢোকার সময় শুধু বিমানের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের তল্লাশি পেরিয়ে যেতে হয়। এভিয়েশন সিকিউরিটি কিংবা কাস্টমসের কোনো কর্মকর্তা তাদের তল্লাশি করে না।
কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপত্তা তল্লাশী না হওয়ার এ সুযোগকেই কাজে লাগানোর চেষ্টায় ছিলেন প্যান্ট্রিম্যান আজিজ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আজিজসহ বিমানের অন্যান্য কর্মচারী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। কারণ, যারা বিএফসিসি থেকে বের হয়ে যান, তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়া হয়ে থাকে। আজিজও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়েছিলেন। সে ক্যারিয়ারে (উড়োজাহাজে) যায় নাই। তার ডিউটিও ক্যারিয়ারে ছিল না।”
“এর সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তার কাছে বিমানের কেউ না কেউ এই স্বর্ণ দিয়েছে। এটা আমাদের ধারণা। স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিনি বলেন, “স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনাটি শোনার পর আমরা বিমানবন্দরে আসি। কোনদিক দিয়ে চোরাচালান হয় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কার কাছ থেকে কীভাবে পাচার হয়, নেওয়া হচ্ছে তার খোঁজ। এছাড়া বিমানে কীভাবে খাবার সরবরাহ করা হয় তাও দেখা হচ্ছে।”
এসময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরে সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে তল্লাশি ও নিরাপত্তা যাতে বাড়ানো হয় সেটা দেখা হবে।
“আমরা একটা পরিকল্পনা করব যাতে বিএফসিসির ভেতরে আমাদের তত্ত্বাবধানেও তল্লাশি থাকে।”
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন-