ইউরোপা কনফারেন্স লিগের প্রথম আসরের ফাইনালে বুধবার ফেইনুর্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় মরিনিয়োর এএস রোমা। ৩২তম মিনিটে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি করেন ২২ বছর বয়সী নিকোলো জানিওলা।
১৪ বছরের মধ্যে রোমার প্রথম কোনো ট্রফি এটি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় তারা শিরোপার স্বাদ পেল ৬১ বছর পর! এর আগে তাদের একমাত্র ইউরোপিয়ান ট্রফি ছিল সেই ১৯৬১ সালে। সেবার তারা জিতেছিল ফেয়ার্স কাপ, যে টুর্নামেন্ট বিলুপ্ত হয়ে গেছে ১৯৭১ সালের পর।
মরিনিয়োর হাত ধরে রোমার এই সুদীর্ঘ খরা কেটেছে। তিনি নিজেও উঠে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। প্রথম কোচ হিসেবে তিনি জিতলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা লিগ, উয়েফা কাপ ও কনফারেন্স লিগ। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ৫টি ফাইনাল খেলে ৫ বারই মাঠ ছাড়লেন ট্রফি নিয়ে।
ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় কোচ হিসেবে তিনি জিতলেন ৫টি ইউরোপিয়ান ট্রফি। এবারের আগে পোর্তোর কোচ হিসেবে তিনি জিতেছিলেন উয়েফা কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইন্টার মিলানকে এনে দেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে জতেন ইউরোপা লিগ। ৫টি ইউরোপিয়ান শিরোপা জয়ের কীর্তি আর আছে কেবল কিংবদন্তি ইতালিয়ান কোচ জোভান্নি ত্রাপাত্তোনির।
কনফারেন্স লিগের সেমি-ফাইনাল জয়ের পর মাঠে অশ্রু ঝরিয়েছিলেন মরিনিয়ো। ফাইনাল জয়ের পরও তার চোখে দেখা গেল জল। আবেগে থরথর হয়েই তিনি জানালেন নিজের অনুভুতির কথা।
“আমার ক্যারিয়ারের দারুণ একটি ব্যাপার হলো, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ইউরোপা লিগের জয়টি ছাড়া, অন্য ট্রফিগুলো আমি জিতেছি পোর্তো, ইন্টার ও রোমার মতো ক্লাবে, যা আমার কাছে খুব, খুব, খুবই স্পেশাল।”
“শিরোপা জয়ের জন্য যখন বিনিয়োগ করা হয় প্রচুর, শিরোপাই যখন প্রত্যাশিত থাকে, তখন এটা জেতা এক ব্যাপার, কিন্তু পুরোপুরি অন্য ব্যাপার (যখন প্রত্যাশা থাকে না), অমর হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়, সত্যিই স্পেশাল মনে হয়।”
তিনটি ভিন্ন দশকে ট্রফি জয় করার কীর্তিটাও তুলে ধরলেন তিনি মজার সুরে।
“এই ট্রফি রোমার ইতিহাসে আলাদা জায়গা নিয়ে থাকবে, আমার কাছেও। জানতে পারলাম যে কেবল আমি, স্যার অ্যালেক্স (ফার্গুসন) ও জোভান্নি ত্রাপাত্তোনি ট্রফি জিতেছি তিনটি ভিন্ন দশকে। নিজেকে অবশ্য একটু বুড়ো মনে হচ্ছে এতে, তবে আমার ক্যারিয়ারের জন্য এটা দারুণ।”
কনফারেন্স লিগ জয়ের পর নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা থামিয়ে দিলেন ৫৯ বছর বয়সী এই পর্তুগিজ কোচ। পুরনো সব ক্লাবের প্রতি অনুরাগের কথা জানিয়ে বলে দিলেন, রোমাতেই থাকছেন তিনি।
“এখন আমি এখানেই থাকছি, কোনো সংশয় নেই। যদিও কিছু গুজব ছড়াচ্ছে, তবে আমি রোমাতেই থাকতে চাই।”
“অবশ্যই নিজেকে রোমানিস্তা মনে করি আমি, তবে আমার কাজের ধরনই এটা। আমি পোর্তোর ভক্ত, ইন্টারের ভক্ত, চেলসির সমর্থক, রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে তো আমি স্রেফ খ্যাপাটে, এখন আমি রোমার ভক্ত। এই প্রতিটি ক্লাবের অংশ আমি, কারণ একসঙ্গে অনেক স্মৃতি আমাদের।”