মিরপুর
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ১০ উইকেটে জিতেছে শ্রীলঙ্কা।
২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জিতল দিমুথ করুনারত্নের রান।
শ্রীলঙ্কার
এই জয়ের নায়ক আসিথা। চামিন্দা ভাসের পর মাত্র দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টেস্টে ১০ উইকেট
নেওয়ার কীর্তি গড়ার দিনে তিনি বাংলাদেশকে থামিয়ে দেন ১৬৯ রানে। ২৯ রানের ছোট লক্ষ্য
৩ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেন সফরকারীদের দুই ওপেনার।
৪
উইকেটে ৩৪ রান নিয়ে শুক্রবার পঞ্চম ও শেষ দিন শুরু করা বাংলাদেশ ছিল সাবধানী। দেখেশুনে
খেলছিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন। মনে হচ্ছিল কঠিন সময় পার হয়ে গেছে। এমন সময়ে কাসুন
রাজিথার বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান মুশফিক। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান চারটি
চারে ৩৯ বলে করেন ২৩।
সাকিব
শুরু থেকেই ছিলেন ইতিবাচক, অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের একটি বল তাড়া করার চেষ্টা করা ছাড়া
সাবধানীই ছিলেন লিটন। রাজিথার ওভারে সাকিবের তিন চারে সরে যায় চাপ। লিটনের সঙ্গে দ্রুতই
জমে যায় তার জুটি।
ওয়ানডে
ঘরানার ব্যাটিংয়ে ৫৮ বলে আসে তাদের জুটির পঞ্চাশ। লাঞ্চের আগে শেষ বলে ধনাঞ্জয়া ডি
সিলভাকে ফ্লিক করে বাউন্ডারিতে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সাকিব। ৮ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চে
যায় বাংলাদেশ।
তাদের
দিক হারানোর শুরু লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারে। পঞ্চাশ ছুঁয়ে আসিথার দুর্দান্ত ফিরতি
ক্যাচে বিদায় নেন লিটন। তিন চারে ১৩৫ বলে তিনি করেন ৫২।
টেস্টে
সাকিব ও লিটনের প্রথম শতরানের জুটির পর ১৩ রানেই শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে গুটিয়ে
যায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।
প্রথম
টেস্টে যেভাবে আউট হয়েছিলেন, অনেকটা সেভাবেই ফেরেন সাকিব। ওশাদার বাউন্সারে ধরা পড়েন
কিপারের গ্লাভসে।
আগের
দিন তিন ঘণ্টা ব্যাটিং করতে চাওয়ার কথা বলেছিলেন সাকিব। কাছাকাছি যেতে পেরেছেন বাঁহাতি
এই অলরাউন্ডার, তার ইনিংস স্থায়ী হয় ১৪১ মিনিট। ৭ চারে ৭২ বলে ৫৮ রান করে তার বিদায়ের
পর দ্রুতই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
টেস্টে
ফেরার ম্যাচে নিদারুণভাবে ব্যর্থ মোসাদ্দেক হোসেনকে এলবিডব্লিউ করে দেন রমেশ মেন্ডিস।
ইনিংসে লঙ্কান স্পিনারদের উইকেট এই একটিই। তাইজুল ইসলামকে এলবিডব্লিউ করে ক্যারিয়ারে
প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের স্বাদ পান ফার্নান্দো।
পরের
বলে ধরা পড়ে আরও বড় অর্জন। খালেদ আহমেদকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দেন তিনি।
এই উইকেটে শ্রীলঙ্কার কেবল দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টেস্টে ১০ উইকেট পেলেন ফার্নান্দো।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেও দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টেস্টে পেলেন তিনি
১০ উইকেট।
খালেদ
শূন্যতে ফেরায় বিব্রতকর আরেকটি রেকর্ড হয়ে গেল বাংলাদেশের। দুই ইনিংস মিলিয়ে এই ম্যাচে
৯ ব্যাটসম্যান আউট হলেন শূন্য রানে, বাংলাদেশের যা সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ড ছিল ২০১৮
সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জ্যামাইকায় ৮ শূন্য।
ম্যাচে
১৪৪ রানে ১০ উইকেট নিয়ে আসিথা ফার্নান্দো জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
২৯
রানের ছোট্ট লক্ষ্য স্রেফ ৩ ওভারে ছুঁয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। টি-টোয়েন্টি ঘরানার ব্যাটিংয়ে
৯ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২১ রান করেন ওশাদা ফার্নান্দো। ৯ বলে ১ চারে অধিনায়ক দিমুথ
করুনারত্নে করেন ৭।
দুই
টেস্টেই সেঞ্চুরি করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস:
৩৬৫
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস:
৫০৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস:
(আগের দিন ৩৪/৪) ৫৩.৩ ওভারে ১৬৯ (মুশফিক ২৩, লিটন ৫২, সাকিব ৫৮, মোসাদ্দেক ৯, তাইজুল
১, ইবাদত ০*, খালেদ ০; রাজিথা ১২-৫-৪০-২, আসিথা ১৭.৩-৫-৫১-৬, জয়াবিক্রমা ১৩-০-৪৭-০,
রমেশ ১১-২-২০-১, ধনাঞ্জয়া ২-০১০-০)
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস:
(লক্ষ্য ২৯) ৩ ওভারে ২৯/০ (ওশাদা ২১*, করুনারত্নে ৭*; তাইজুল ১-০-১৬-০, সাকিব ১-০-৭-০,
ইবাদত ১-০-৫-০)
ফল:
শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেটে জয়ী
সিরিজ:
২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয়ী শ্রীলঙ্কা
ম্যান অব দা ম্যাচ:
আসিথা ফার্নান্দো
ম্যান অব দা সিরিজ:
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস