শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে
এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন,
“একটা কথা আমি অনুরোধ করে বলতে চাই, আজকে যার
যার অবস্থান আছে সেই অবস্থান থেকে আমাদের লড়াই করতে হবে, রাজনীতিকে
উদ্ধার করতে হবে। সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবার জন্য আমাদের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
একমত হয়েছেন এবং কাজ করছেন।
“আমরা বিশ্বাস করি যে, একটা রূপ দিতে পারব। সেখান থেকে আমাদের একটা বৃহত্তর
গণআন্দোলন এই সরকারের পতনের জন্য শুরু করতে পারব।”
আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গ
টেনে মির্জা ফখরুল বলেন,
“আমরা এটা স্পষ্ট করে সবসময় বলে আসছি যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন
সম্ভব নয়। এটা আমাদের কাছে পরীক্ষিত। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতার থেকে দেখেছি যে,
আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়।
“এটা তো তোমরাই তো বলেছিলে,
কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা। তখন দেশনেত্রী বেগম
খালেদা জিয়া সেটা মেনে নিয়ে কেয়ারটেকোর সরকারের বিধান সংবিধানে সংযোজন করেছিলেন।
এরা (আওয়ামী লীগ) কতটা প্রতারক, কতটা তারা মুনাফেক যে,
তারা সেই জায়গা থেকে সরে গিয়ে নিজেদের স্বার্থে দলীয় সরকারের অধীনে
নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। আজকে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, ভোট
ব্যবস্থাই এখন নেই।”
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার
আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, “সমস্ত রাজনৈতিক
জোট, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণ সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে যুদ্ধ শুরু করতে হবে, সেই
যুদ্ধ হচ্ছে আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরে পাবার জন্য। কোনো দল বা
ব্যক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়।”
‘জনগণের সরকার’ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি কী হবে,
সেই ব্যাখ্যায় ফখরুল বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এটা সংবিধানে ছিলই।
নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এটাতে সবাই ভোট দিতে পারবে, সবাই তার মতামত প্রকাশ করতে পারবে। এটা আমাদের একমাত্র পথ।
“আমার বিশ্বাস, এটাতে আমরা সফল
হলে এই ভয়াবহ দানব মনোস্টারকে সরিয়ে জনগণের একটা সংসদ জনগণের
একটা রাষ্ট্র আমরা নির্মাণ করতে পারব।”
‘লুটের রাজত্ব বের করেছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা
জিয়াকে উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছে, পদ্মা
সেতুর উপর থেকে তাকে টুস করে ফেলে দেওয়া হবে। পদ্মা সেতু
কারো পৈত্রিক সম্পত্তি না। এটা এদেশের মানুষের কষ্টার্জিত যে অর্থ, এদেশের মানুষ যে ট্যাক্স প্রদান করে, সেই ট্যাক্সের
টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আর এরা লুট করছে। এরা লুটের রাজত্ব বের
করেছে।
“ওরা মনে করেছে- এটা সেই বর্গীদের সময়ের মত; ছেলে ঘুমালো, পাড়া ঘুমালো, বর্গী এলো দেশে, বুলবুলিতে
ধান খেয়েছে খাজনা দেব কিসে? এভাবে তারা লুট করছে জনগণের
অর্থ। আর মানুষকে ভয় পাইয়ে দিতে তারা নানা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটাচ্ছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের
নেতাকর্মীদের ওপর
ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের ‘হামলার’ নিন্দা করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “যে ঘটনা তারা ঘটিয়েছে, এটাই তাদের আসল চেহারা। আওয়ামী লীগ একটা সন্ত্রাসী দল। তাদের জন্মের পর
থেকে তারা সন্ত্রাসী এই দল তৈরি করেছে।”
২০ দলীয় জোটের শরিক
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও
ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
এনপিপির চেয়ারম্যান
ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায়
আলোচনা সভায়
অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা
জামাল হায়দার, বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, জাগপার খন্দকার লুতফর
রহমান, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, এনডিপির
আবু তাহের, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, গণঅধিকার পরিষদের
নুরুল হক নুর।