লেবু এবং রেটিনলের মতো গ্রিন টি ত্বককে
আর্দ্রতা এবং প্রশান্তি দেয়। স্বাস্থ্যকর চা গ্রিন টি সুস্থ জীবনধারা এবং ত্বকের যত্নে
ভালো কাজ করে। এছাড়াও অন্ত্র পরিষ্কার রাখে বলে এটা ‘ডিটক্স হিরো’ নামেও পরিচিত।
গ্রীষ্মমন্ডলীয়, উচ্চ-আর্দ্রতা জলবায়ুর
জন্য গ্রিন টি শরীর ও ত্বকের যত্নে ভালো কাজ করে।
ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশত প্রতিবেদনে এভাবেই
গ্রিন টি সম্পর্কে জানান, ভারতের ‘অ্যাব্রোসিয়া অ্যাস্থেটিকস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ত্বক
বিশেষজ্ঞ ডা. নিকিতা সোনাভান।
গ্রিন টির উপকারিতা
প্রসাধনীর মোড়কে উপাদানের তালিকায় ‘ক্যামিলিয়া
সাইনেসিস’ আছে কিনা খেয়াল করার পরামর্শ দেন ডা. নিকিতা, এটা গ্রিন টি’র সাধারণ একটি
নাম।
প্রসাধনীতে থাকা গ্রিন টির নির্যাস নানান
উপকার করে। এতে থাকা পলিফেনল নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
এছাড়াও, গ্রিন টি অন্যান্য পুনরুজ্জীবনকারী
উপাদানগুলোর মধ্যে একটি।
ডা. সোনাভেন বলেন, “গ্রিন টি-তে পাওয়া
ক্যাটেচিন এবং পলিফেনলগুলো হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (অ্যান্টি-এইজিং গুণ সম্পন্ন) যা
শরীরে উন্মুক্ত রেডিকেলের পরিমাণ কমায়। বলিরেখা, সূক্ষ্ম রেখা, কালচে দাগ, ঝুলে পড়া
ত্বক এবং অকাল বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি, এর উচ্চ ‘অলিগোমেরিক প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিনস’
(ওপিসিএস) ঘনত্ব বার্ধক্যের প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।”
পরামর্শ দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “ত্বক
উজ্জ্বল করার কার্যকারিতার ওপর ২০২০ সালের গবেষণায় আরবুটিনকে ছাড়িয়ে গেছে গ্রিন
টি ক্যাটেচিন। কালো দাগ দূর করতে এবং হাইপারপিগমেন্টেশন বা দাগ ছোপের সমস্যা কমাতে
গ্রিন টি প্রাকৃতিক ও নিরাপদ পছন্দ।”
কারণ
গ্রিন টি’র উপকারিতা অনেক। শুষ্ক এবং
শুকনো ত্বক থেকে লোমশ, নিস্তেজ এবং যৌবনহীন ত্বক ইত্যাদি সব ধরনের ত্বকে গ্রিন টি উপকারী।
রয়েছে একগুচ্ছ উপাদান এবং বৈশিষ্ট্য যেমন- ভিটামিন ই, ক্যাফেইন, ক্যাটেচিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
ভিটামিন বি২ এবং বি৩, যা সব ধরনের ত্বকের চাহিদা পূরণ করে।
“ভিটামিন ই শুধুমাত্র ত্বককে আর্দ্র রাখে
না, এটি উজ্জ্বল করতে এবং ক্ষতি মেরামত করতেও সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ‘ইজিসিজি’
হল গ্রিন টি’র সক্রিয় উপাদানগুলোর মধ্যে একটি যা ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে চমৎকার
কাজ করে।”
রয়েছে রিবোফ্লাভিন নামক ভিটামিন যা ত্বকের
তারুণ্য এবং দৃঢ়তা বাড়ায়। গ্রিন টি’তে থাকা নায়াসিন ত্বকের লালচে ভাব কমায়, ক্যাফেইন
চোখের চারপাশের কালো দাগ এমনকি ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে বলে জানান, ডা. সোনাভানে।
তিনি আরও বলেন, “তৈলাক্ত এবং আবদ্ধ হয়ে
যাওয়া ত্বকের জন্য এটা উপকারী।”
তার মতে, গ্রিন টি-তে রাসায়নিকভাবে অ্যামিনো
অ্যাসিড-বাইন্ডিং যৌগ রয়েছে যা ট্যানিন নামে পরিচিত। এটা প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভিদে পাওয়া
অ্যাস্ট্রিনজেন্ট যৌগ লোমকূপের আকার কমাতে এবং আবদ্ধ হয়ে যাওয়ার রোধ করতে সহায়তা করে।”
গ্রিন টি’র উপকারিতা জানার পরে তা আসলে
কোন উপায়ে ভালো কাজ করে তা নিয়ে প্রশ্ন জাগতে পারে। অর্থাৎ, গ্রিন টি পান করা নাকি
ত্বকে ব্যবহার নিয়ে দ্বন্দ্ব জাগতে পারে।
গ্রিন টির উপকার পেতে বাঁধা-ধরা কোনো
নিয়ম নেই, দুভাবেই সমানভাবে কাজ করে।
“গ্রিন টি পান করা এবং ত্বকে ব্যবহার
করা- দুটোই ত্বকের জন্য উপকারী বলে অনেক গবেষণায় দেখানো হয়েছে। গ্রিন টি এবং এর নির্যাস
শুধুমাত্র ত্বকের চেহারা উন্নত করতে পারে না বরং ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য
করে”, বলেন ডা. নিকিতা।
তবে মনে রাখতে হবে, বেশি মাত্রায় গ্রহণ
করলে এতে থাকা ক্যাফেইন শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
হিসেবে মাথাব্যথা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন থেকে শুরু করে যকৃতের ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে-
জানান এই চিকিৎসক।
আরও পড়ুন