ক্যাটাগরি

ইউক্রেইনের ‘শত্রু’ তালিকায় উঠল কিসিঞ্জারের নাম

শুক্রবার নিজের ৯৯তম জন্মবার্ষিকীতে তার এই তকমা পাওয়ার খবরটি দিয়েছে
রুশ সংবাদ মাধ্যমে রাশিয়া টুডে।

সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রতি পক্ষপাতি হিসেবে চিত্রিত করে
কিসিঞ্জারের নাম নিজেদের ওই তালিকায় তুলছে মিরোটভোরোটস ওয়েবসাইট।

ওয়েবসাইটটি ইউক্রেইনের গোয়েন্দা সংস্থা ‘এসবিইউ’ নিয়ন্ত্রিত
বলে রাশিয়ার দাবি, যেখানে রুশবিরোধী নানা প্রপাগান্ডা চালানো হয়।

রিপাবলিকান হেনরি কিসিঞ্জার গত শতকের ৬০ ও ৭০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়ন কিংবা চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের
সময় পাকিস্তানের পক্ষে তার অবস্থানসহ নানা ঘটনায় বিতর্কিতও তিনি।

১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে
থাকা কিসিঞ্জার তার আগের চার বছর সেদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে ছিলেন।

ইউক্রেইনের কাছে বরাবরই নিন্দিতই কিসিঞ্জার। তিনি কিইভ এবং মস্কোর মধ্যে
আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। দুদিন আগেও যুদ্ধ শেষ করার
জন্য রাশিয়ার কাছে ইউক্রেইনের নিজেদের ভূ-খণ্ড ছেড়ে দেওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইউক্রেইনে রাশিয়ার জন্য বিব্রতকর পরাজয় না চাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমাদের
কাছে আহ্বানও রাখেন তিনি।

এরপরই ‘রুশ অপরাধীদের সহযোগী’ হিসেবে
তাকে ইউক্রেনীয়দের ‘কালো’ তালিকাভুক্ত
হতে হল।

আইরটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিরোটভোরোটসে কিসিঞ্জারকে রুশ প্রপাগান্ডার
প্রচারক এবং নিপীড়নের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড
ইকোনমিক ফোরামে’ এ অংশ নেওয়া দেশগুলোকের কাছে
ইউক্রেইন প্রসঙ্গে একগুচ্ছ পরামর্শ দেন কিসিঞ্জার।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, মস্কো এবং কিইভ একটি শান্তি চু্ক্তিতে পৌঁছাতে
না পারলে ইউক্রেইনের এই সংঘাত যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো এবং রাশিয়ার
মধ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেবে।

মস্কো-কিইভকে শান্তি চুক্তিতে যেতে, তিনি ইউক্রেইনকে অন্ততপক্ষে ফেব্রুয়ারির
আগের অবস্থায় ফেরার পরমর্শ দেন। এও বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি রক্ষায় ক্রিমিয়ার কাছে ইউক্রেইনকে
তার আঞ্চলিক দাবি ছেড়ে দিতে হবে। এ ছাড়া দনেৎস্ক এবং লুহানস্ককের স্বায়ত্তশাসন দিতে
ইউক্রেইনের কাছে দাবি রাখেন কিসিঞ্জার।

পূর্ব ইউক্রেইনের এই দুই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ইতোমধ্যে হারিয়েছে কিইভ সরকার।
বিপরীতে সেগুলোকে স্বীকৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ডাভোসে রাখা বক্তৃতায় ইউক্রেইন ইস্যুতে আট বছর আগে তার চিন্তাভাবনার
কথা আবারও তুলে ধরেন কিসিঞ্জার। তিনি বলেন, ইউরোপে বিভেদের ক্ষেত্র হয়ে ওঠার চেয়ে ইউক্রেইনের
একটি ‘নিরপেক্ষ রাষ্ট্র’ হিসেবে
থাকাই ভালা, যা হতে পারে রাশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সেতুবন্ধন।

এদিকে কিসিঞ্জারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির
জেলেনস্কি ডাভোসের ভাষণেই বলেন, “ইউক্রেইন তার মাটির সম্পূর্ণটা
ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।”

তবে চলতি সপ্তাহে জেলেনস্কি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, “আমরা
চেষ্টা করতে পারি, কূটনৈতিক পথেও হাঁটতে পারি, যদি না খুব দেরি হয়ে থাকে।”