শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সমাবেশে তিনি বলেন, “যারা এই অপকর্মের সাথে জড়িত, তারা তাদের উপরতলার নেতাদের নির্দেশেই এ কাজ করেছে।
“আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ জায়গা, সরকারের সর্বোচ্চ স্থান থেকে এসব নির্দেশে তারা অপকর্ম করছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় এলাকায় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশ করে যুবদল।
মোশাররফ বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসী গুণ্ডারা যেভাবে আক্রমণ করেছে, আমাদের ছেলেদের শরীর থেকে রক্ত ঝরিয়েছে, ছাত্র নেত্রীদের যেভাবে নির্দয়ভাবে আঘাত করেছে…সবই দেশে-বিদেশে পত্র-পত্রিকায় ভাইরাল হয়ে গেছে।”
নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি স্মরণ করে দিতে চাই, এই নেতাদের নির্দেশে এই যুবলীগ-ছাত্রলীগের ‘পান্ডারা’ নিউমার্কেটে ঘটনা ঘটিয়েছিল। পার পায়নি, তারা কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছে।
“প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছিল তারা, কিন্তু তাদের নেত্রী ক্ষমতায় থাকা সত্ব্বেও রেহাই পায় নাই। বিশ্বজিত, যাকে সেই যুবলীগ-ছাত্রলীগ রাস্তায় প্রকাশ্যে তাকে হত্যা করেছিল যাদের নির্দেশে, তাদের দল ক্ষমতা থাকা অবস্থায়ও তারা সেখান থেকে রেহাই পায়নি।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমি এই (ঢাকা) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলাম। আজকে আমার কষ্ট হয় এই ছাত্ররা যাদের আমরা সোনার ছেলে বলি, সারা বাংলাদেশ থেকে বেছে বেছে যে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে, সেই সোনার ছেলেদের আজকে এই গায়ের জোরের সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ব্যবহার করছে, তোমাদেরকে দানবে পরিণত করছে।
“আমি ছাত্রদের বলতে চাই, ওই ধরনের নেতাদের প্ররোচনার তোমাদের নিজের জীবনকে শেষ করবে না। এখনও সময় আছে তোমাদের সংগতি ফিরে আসুক।”
সরকার ‘দুর্বল’ হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এই সরকারের দেশে-বিদেশে তাদের সমর্থন শূন্য হয়ে গেছে। তারা একা হয়ে গেছে। এই সরকার দুর্বল সরকার। এই দেশের মানুষ এই স্বৈরচার সরকারের থেকে মুক্তি চায়।আমি বিশ্বাস করি, এই ফয়সালা রাজপথেই হবে।
“এই রাজপথ থেকে একটা ধাক্কা দিতে হবে। আমাদের ছাত্রদল তাদের শরীরের রক্ত ঢাকা শহরে ঝরিয়ে দিয়ে এই ধাক্কা দেওয়ার আন্দোলনের সূচনা করেছে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, আমাদের সকল অঙ্গসংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র দলের পাশে থেকে একই ইস্যুতে আমাদেরকে আন্দোলনে নামতে হবে।”
আন্দোলনের বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলনের ইস্যু এই সরকারের পদত্যাগ, আমাদের আন্দোলনের ইস্যু অবৈধ সংসদ বাতিল, খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীন রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা।
“আমাদের আন্দোলনের ইস্যু নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা যে নির্বাচনে জনগণের নিজের হাতে ভোট দেবে, ইভিএমের নয়।”
শুক্রবার সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে সভাপতি এবং মোনায়েম মুন্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবদলের ছয় সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বিদায়ী সভাপতি সাইফুল আলম নিরব বলেন, “টুকু-মুন্নার নেতৃত্বেই যুব দল আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে এই সরকারের পতন ঘটাবে। ছাত্রদলের ওপর হামলায় আমি বলতে চাই, এখন থেকে আমরা যুবদলসহ সকল অঙ্গসংগঠন তাদের পাশে থাকব।”
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুব দলের নতুন সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, সহসভাপতি কামরুজ্জামান দুলাল, সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন ও গোলাম মওলা শাহীন, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, জগলুল পাশা পাপেল ও এনামুল হক এনামসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।