মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে শনিবার ৮ উইকেটে জিতেছে রুপালি ব্যাংক।
নাহিদার অসাধারণ বোলিংয়ে কেরানীগঞ্জকে স্রেফ ১০০ রানে গুটিয়ে দেয় রুপালি ব্যাংক। ফারজানার ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে ২১ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কেরানীগঞ্জ। তমালিকা সুমনার রান আউটে যার শুরু। এরপর রুপা রয় ও পুজা চক্রবর্তী ফেরান টপ অর্ডারের বাকি দুই জনকে।
প্রতিপক্ষের মিডল অর্ডারে ধস নামান নাহিদা। কেরানিগঞ্জের মাঝের ৪ ব্যাটারই তার শিকার। প্রথম স্পেলে ৫ ওভার বোলিং করে পাঁচটিই মেডেন নেন তিনি। সঙ্গে নেন এক উইকেট। দ্বিতীয় স্পেলে এসে ভাঙেন তিনি ইতি ও তাহিন তাহেরার ১২০ বল স্থায়ী ৩৯ রানের জুটি। নিজের সপ্তম ওভারে একটি রান দেন নাহিদা। পরে নবম ওভারে দেন একটি ওয়াইড।
সর্বোচ্চ ৩৩ রান করা ইতিকে ফিরিয়ে কেরানীগঞ্জের ইনিংস গুটিয়ে দেন নাহিদা। তার চমৎকার বোলিংয়ের পাশে দুটি করে উইকেট নেন পুজা ও মুক্তা রবীন্দ্র।
রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই সাথী রানী বর্মনের উইকেট হারায় রুপালি ব্যাংক। পরে সানজিদাকে নিয়ে ৫৮ রানের জুটি গড়েন ফারজানা। ৭ চারে ২৯ রানে করা সানজিদার বিদায়ে ভাঙে জুটি।
৬৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করা ফারজানা দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন শুকতারাকে নিয়ে। ১১ চারে ৫৫ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন ফারজানা, শুকতারা ২ চারে করেন ১২।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কেরানীগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমি: ৪৭.৪ ওভারে ১০০ (নাজ ১১, তমালিকা ০, সুমি ৫, কামরুন ৩, ইতি ৩৩, তাহিন ১১, জহুরা ০, ত্রিপাঠী ৪, তৃষ্ণা ৮, পিংকি ০, ঝুমুর ০*; পুজা ৯-১-২০-২, রুপা ৭-০-২৩-১, নাহিদা ৯.৪-৭-২-৪, মুক্তা ৮-৩-১৮-২, লাখি ৪-০-৭-০, শরিফা ৪-১-১০-০, শুকতারা ৬-০-১০-০)
রুপালি ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ: ২১ ওভারে ১০৩/২ (সানজিদা ২৯, সাথী ০, ফারজানা ৫৫*, শুকতারা ১২*; তৃষ্ণা ৫-১-১৮-০, ত্রিপাঠী ৪-১-২৩-১, পিংকি ২-০-১৭-১, তমালিকা ৬-০-২৮-০, ঝুমুর ৪-১-১৭-০)
ফল: রুপালি ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ ৮ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: নাহিদা আক্তার
বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপি-শেখ রাসেল
দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপিকে অল্পতেই আটকে রাখলেন রোকেয়া আহমেদ, সানজিদা মেঘলারা। রান তাড়ায় দুর্দান্ত এক অপরাজিত ইনিংস খেলে শেখ রাসেল ডেভেলপমেন্ট একাডেমিকে বড় জয় এনে দিলেন মুরশিদা খাতুন হ্যাপি।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে শেখ রাসেলের জয় ১০ উইকেটে। প্রতিপক্ষকে ১২৩ রানে থামিয়ে দিয়ে ২৫.১ ওভার বাকি থাকতে পৌঁছে যায় তারা জয়ের বন্দরে।
১২ চারে ৮৫ বলে ৭৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন মুরশিদা। জাতীয় দলের এই ওপেনারই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় আনসার অ্যান্ড ভিডিপি। এরপর দ্রুত ফেরেন টপ অর্ডারের বাকি দুইজনও।
৭৪ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুরশিদা খাতুন হ্যাপি। ছবি: বিসিবি।
১৬ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন রেশমা আক্তার ও মাহমুদা মাহি। তাদের ১১৫ বলে স্থায়ী ৪৫ রানের প্রতিরোধ ভাঙার পর তেমন জমেনি আর কোনো জুটি।
আনসার ও ভিডিপির কেবল চার ব্যাটার যেতে পেরেছেন দুই অঙ্কে। তবে কেউই পার করতে পারেননি ২৫ রান।
শেখ রাসেলের হয়ে ১৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রোকেয়া। দুটি করে প্রাপ্তি সানজিদা ও সুমি রানী রয়ের।
জবাব দিতে নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন একা মল্লিক ও মুরশিদা। এক চারে ২১ রান করা একা আহত হয়ে ছাড়েন মাঠ।
পরে ফারজানা আক্তার লিসাকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন মুরশিদা। ৮ বোলার ব্যবহার করেও শেখ রাসেলের কোনো উইকেট নিতে পারেনি আনসার অ্যান্ড ভিডিপি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপি: ৪৮.৫ ওভারে ১২৩ (আফিয়া ০, আয়েশা ৮, ইসমত ৭, রেশমা ১৮, মাহমুদা ২৫, আয়শা ৮, পুজা ৯, পান্না ১৫, লিলি ১০, তিথি ৪, রুপা ১*; সানজিদা ৮-৪-৮-২, প্রিয়াঙ্কা ৬-১-১৮-১, সোবহানা ৫-২-১২-০, ইয়ামিম ৭-২-১৩-০, ইসমত ৪-০-২০-০, সুমা ১০-২-২৭-২, রোকেয়া ৮.৫-২-১৯-৩)
শেখ রাসেল: ২৪.৫ ওভারে ১২৫/০ (একা ২১ আহত অবসর, মুরশিদা ৭৪*, ফারজানা ২১*; রুপা ৪-০-১৬-০, তিথি ৯-১-২৭-০, মাহমুদা ২-০-২০-০, পুজা ১-০-৬-০, লিলি ৩-০-১৯-০, আফিয়া ২-০-১১-০, ইসমত ৩-০-১৮-০, আয়সা ০.৫-০-৮-০)
ফল: শেখ রাসেল ১০ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: মুরশিদা খাতুন হ্যাপি
সিটি ক্লাব-খেলাঘর
ফোয়ারা আক্তার, ফাতেমা জাহানদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে একশও পার করতে পারল না সিটি ক্লাব। পরে ব্যাটারদের মিলিত চেষ্টায় জিতল খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি।
বিকেএসপির এক নম্বর মাঠে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে খেলাঘর। ৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তাদের খেলতে হয়েছে ৩৭.২ ওভার পর্যন্ত।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি সিটি ক্লাবের। ৩৩ রানে হারায় তারা ৩ উইকেট।
৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা ফোয়ারা আক্তার। ছবি: বিসিবি।
বিপদে পড়া দলের হাল ধরে লড়াই করেন পারভিন খান ও ফাতেমা আক্তার। অনেকটা সময় উইকেটে কাটালেও দলের রান তেমন বাড়াতে পারেননি তারা।
বাকি ব্যাটাররাও রাখতে পারেননি অবদান। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৪ রান করেন ফাতেমা। ৪৫ বলের ইনিংসে তার চার একটি।
খেলাঘরের হয়ে ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ফোয়ারা আক্তার। দুটি করে প্রাপ্তি ফাতেমা জাহান ও লতা মন্ডলের।
রান তাড়ায় খেলাঘরও শুরুতে উইকেট হারাতে থাকে নিয়মিত। তবে লক্ষ্য ছোট হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ই পেয়েছে দলটি।
তাদের হয়ে সর্বোচ্চ রান আসে মিষ্টি রানী ও সুলতানার ব্যাট থেকে। দুইজনেই করেন ২০ রান করে।
সিটি ক্লাবের হয়ে ৩ উইকেট নেন ফাতেমা। দুটি শিকার ধরেন সুরাইয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিটি ক্লাব: ৪৩.১ ওভারে ৯৩ (অচেনা জান্নাত ৭, ঝিলিক ১৭, সাদিয়া ০, পারভিন ১৫, ফাতেমা ২৪, লাকি ১, আসফিয়া ৩, সুরাইয়া ০, শিবানি ১০, মুরশিদা ৭, কোহিনুর ০*; রিতু ৯.১-২-১০-১, ফোয়ারা ১০-৪-১২-৩, ফাতেমা ৯-৩-১১-২, লতা ৬-০-১৪-২, সুলতানা ৭-০-৩১-০, স্বর্ণা ২-০-১১-০)
খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি: ৩৭.২ ওভারে ৯৫/৬ (মিষ্টি ২০, সাবাকুন ৩, সুলতানা ২০, লতা ১৫, রিতু ১২, স্বর্ণা ১২, ফাতেমা ৪*, মরজিনা ০*; সুরাইয়া ১০-১-৩০-২, কোহিনুর ২-০-১০-০, ফাতেমা ১০-১-১৮-৩, পারভিন ৫-১-১৫-১, মুরশিদা ১০-৩-১৬-০, লাকি ০.২-০-৪-০)
ফল: খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি ৪ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ফোয়ারা আক্তার