ক্যাটাগরি

অধিকাংশ মিল ধান কিনে মজুদ করছে: খাদ্যমন্ত্রী

রোববার
সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ‘বোরো ২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিং সংক্রান্ত
অনলাইন মতবিনিময় সভায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।

মিল
পর্যায়ে ধান কেনা ও চাল ভাঙানোর বিষয়টি তদারকির পাশাপাশি ধান-চাল ব্যবসায় যুক্ত করপোরেট
হাউজের সঙ্গে বৈঠক করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।  

ব্যবসায়ীদের
‘মজুদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা’ চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অধিকাংশ মিল মালিক বাজার
থেকে ধান কিনলেও উৎপাদনে যাচ্ছে না।”

প্রতিবছর
বোরো মৌসুমের ধান বাজারে আসার পর চালের দাম কমতে শুরু করলেও এবার ঘটছে উল্টোটা।

নতুন
ধান বাজারে আসার পর থেকে চালের দামও বাড়তে শুরু করেছে বলে খুচরা বিক্রেতারা দাবি করছেন।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন মিল থেকে দাম বাড়ানো হয়েছে।

আর
মিল মালিকরা বলছেন, বাজারে নতুন ধান আসলেও দাম চড়া। গত বছরের তুলনায় প্রতিমণ ধানে ২০০
থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি গুণতে হচ্ছে।

রোববার
দুই পক্ষের বক্তব্য সরাসরি নাকচ না করলেও খাদ্যমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে বাজারে ‘অশুভ
প্রতিযোগিতার’ কথা। তিনি মজুদদারির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য
কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

সাধন
চন্দ্র বলেন, “বাজারে নতুন ধানের চাল আসছে না, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ধান কিনে মজুদ করার
অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

“অধিকাংশ
মিল মালিক বাজার থেকে ধান কিনলেও তারা উৎপাদনে যাচ্ছেন না। বাজারে নতুন চাল এখনও আসছে
না। এখন বাজারে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে তা গত বছরের পুরাতন চাল। তাহলে নতুন ধান যাচ্ছে
কোথায়?”


বোরো ধান উঠলেও কমছে না চালের দাম
 

এবছর
থেকে মিল পর্যায়ে ধান কেনা ও চাল ভাঙানোর বিষয়টি তদারকি করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,
ধান মজুদের এই অবস্থা চলতে দেওয়া হবে না। কে কত পরিমাণ ধান কিনছেন এবং কে কত পরিমাণ
চাল ‘ক্রাসিং’ করে বাজারে ছাড়ছেন তা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের রিপোর্ট আকারে প্রেরণ
করতে হবে।

চালের
দাম বাড়ার পেছনে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ
করেন মন্ত্রী।

“বিভিন্ন
করপোরেট হাউজ ধান চালের ব্যবসা শুরু করেছে। তারা বাজার থেকে ধান কিনে মজুত করছে এবং
প্যাকেটজাত করছে। প্যাকেটজাত চাল বেশি দামে বাজারে বিক্রিও হচ্ছে।”

এসময়
ধান চালের ব্যবসায় সম্পৃক্ত করপোরেট হাউজগুলোর সঙ্গে দ্রুততম সময়ে বৈঠক করতে খাদ্য
অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

গম
নিয়ে বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত থেকে গম দেওয়া বন্ধ
হচ্ছে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। অথচ শুধু ভারত নয় বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশকে
গম দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছে।

তিনি
বলেন, বোরো সংগ্রহ সফল করতে হবে পাশাপাশি বাজার মনিটরিং চালিয়ে যেতে হবে। কেউ যাতে
বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

“কে
কোন দল করে সেটি বিবেচ্য নয়। কেউ চালের বাজার অস্থিতিশীলের চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“

ধানের
উৎপাদন ও বৈরী আবহাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে মাঠ
পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদেরকে কেন্দ্রে সঠিক তথ্য পাঠাতে হবে। উত্তরাঞ্চলে ঝড় ও বৃষ্টিতে
ধানের ক্ষতি হয়েছে।

কোন
জেলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক হিসাব জানা জরুরি। উৎপাদন হিসাব ও ক্ষতির
পরিমাণ নিরুপণ করা না গেলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

খাদ্য
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. মজিবর রহমান এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায়
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেনসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলা প্রশাসক,
কৃষি বিভাগের উপপরিচালক, খাদ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও মিল মালিকরা যুক্ত
ছিলেন।