ক্যাটাগরি

জিয়াকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না: ফখরুল

রোববার
বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাত
বার্ষিকীর আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন,
“আমরা ঢাকার বাইরে যাচ্ছি, আমরা বিভিন্ন জেলাগুলোতে সম্মেলন করতে যাচ্ছি- আমরা দেখছি
মানুষের কী আকুতি, কী আবেগ। কালকে যখন আমি যশোর থেকে ঝিনাইদহ যাচ্ছি-পথে পথে মানুষ
চতুর্দিকে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষে সেই পুরনো অবস্থায় ফিরে যেতে চায় যেন মানুষের অধিকার
প্রতিষ্ঠিত হয়।

“আজকে জিয়াউর
রহমান সাহেবকে যে যত ইচ্ছা বলুক, তাকে খলনায়ক বলুক, পাকিস্তানি চর বলুক আর তাকে সামরিক
জান্তা থেকে উঠে আসার কথা বলুক তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ এ দেশের মানুষের হৃদয়ের
মধ্যে তিনি প্রতিথ হয়ে গেছেন। জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে, তাকে কখনও মুছে ফেলা
যাবে না।“

জিয়ার ‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব,
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পতাকা’ খালেদা জিয়া তুলে নিয়েছিলেন জানিয়ে ফখরুল বলেন, “ওই পতাকা
নিয়ে দেশনেত্রী ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন, দীর্ঘ সংগ্রাম। রাস্তায়, পথে-প্রান্তরে, আমাদের
এই নেতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে, ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন,
সংগ্রাম করেছেন এবং সফল হয়েছেন ১৯৯০ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে
ফিরিয়ে এনেছিলেন।”

তাদের যোগ্য
উত্তরসূরী তারেক রহমানও ‘সুদূর থেকে পথের দিশা’ দিচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক গতকাল না পরশু প্রশ্ন তুলেছেন যে, এনি সেই টেমস নদীর পার থেকে
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠা করবেন-এটা কী সম্ভব হবে?

“ওবায়দুল
কাদের সাহেব অবশ্যই সম্ভব হবে, অবশ্যই সম্ভব হবে। কারণ তারেক রহমান সাহেব সেই রাজনীতি
ধারণ করেছেন সেই রাজনীতি সারাদেশের মানুষের রাজনীতি।“

এ কারণে
তার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ‘আন্দোলনে’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব
বলেন, “তা না হলে এই যে আমাদের ছাত্রদলের ছেলেরা প্রায় ৩৫ জন হাসপাতালে পড়ে আছেন? কেন
আছে তারা ? কী পাচ্ছেন তারা, কী পাচ্ছে? একটা আদর্শ, তারা যেটা বিশ্বাস করে- যে আমাদের
এদেশকে মুক্ত করতে হবে, তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশে এখান থেকে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে।“

দলের প্রতিষ্ঠাতা
জিয়াউর রহমানের মারা যাওয়ার দিনটি বিএনপি শাহাদাত বার্ষিকী হিসেবে পালন করে। ৪১তম বার্ষিকী
উপলক্ষে বিএনপি ১০ দিনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এ আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে তা শুরু
হল।

১৯৮১ সালের
৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর একদল বিপদগামী সদস্যের অভ্যুত্থানে তৎকালীন
রাষ্ট্রপতি জিয়া নিহত হন।

জিয়াউর
রহমান জীবনের সবচেয়ে বড় দুটি দিক তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “একটা হচ্ছে যে, জিয়াউর
রহমান জাতির সবচেয়ে দুঃসময়ে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে
অনুপ্রাণিত করেছিলেন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে যে, তিনি ১৯৭৫ সালে যখন জাতি প্রায় দিশেহারা-কোন
দিকে যাবে বুঝতে পারছে না তখন আবার তিনি ওই সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জনগনের
সামনে এসে দাঁড়িয়ে ফেইস করে, চ্যালেঞ্জ করে মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন এবং তিনি নেতৃত্ব
দিয়েছিলেন।“

আওয়ামী
লীগ ক্ষমতায় ‘একদিন থাকলেও ক্ষতি’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, “পত্রিকায় দেখলাম এই যে পাচার
করা অর্থ তারা না কি ফিরিয়ে আনবে আবার। আরেক শয়তানি শুরু করবে আবার। অর্থাৎ নিজেরা
এই টাকা পাচার করেছে এটাকে ফিরিয়ে এনে জায়েজ করবে। তারা দেশের সম্পদ লুট করা সম্পদ
ফিরিয়ে নিয়ে এসে আবারও লুটপাটের সুযোগ করে দেবে।“

প্রধান
অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে
নির্বাচন করার ব্যবস্থা করতে এ সরকারকে সরাতে রাজপথে নামার আহ্বান জানান।

বিএনপির
প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির
সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস
সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া ও অধ্যাপক সাহিদা রফিক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বক্তব্য
রাখেন।

যুব দলের
সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক দলের আনোয়ার
হোসেইন, মহানগর দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের
হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব
সভায় বক্তব্য দেন।