ক্যাটাগরি

শব্দদূষণে গুলশান, বায়ুদূষণে শাহবাগ শীর্ষে: গবেষণা

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গবেষণার বরাতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।

২০২১ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ঢাকা শহরের ১০টি স্থান- আহসান মঞ্জিল, আবদুল্লাহপুর, মতিঝিল, শাহবাগ, ধানমণ্ডি-৩২, সংসদ এলাকা, তেজগাঁও, আগারগাঁও, মিরপুর-১০ ও গুলশান-২ এর বায়ু ও শব্দ মানের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকার ১০টি জরিপ এলাকার মধ্যে গুলশান-২ এ শব্দের গড় সর্বোচ্চ মান ছিল ৯৫ দশমিক ৪৪ ডেসিবল, যা আবাসিক এলাকার জন্য দিনের বেলার জাতীয় আদর্শ মান ৫৫ ডেসিবলের চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আব্দুল্লাহপুর; যেখানে শব্দের মান ৯৫ দশমিক ৪৩ ডেসিবল,
যা মিশ্র এলাকার জন্য দিনের বেলার জাতীয় আদর্শ মান ৬০ ডেসিবলের চেয়ে ১ দশমিক ৬ গুণ বেশি।

আর তেজগাঁও এলাকায় সর্বনিম্ন শব্দের মান ছিল ৮৯ ডেসিবল, যেটি শিল্প এলাকার জন্য দিনের বেলায় জাতীয় আদর্শ মান ৭৫ থেকে ১ দশমিক ১ গুণ বেশি।

এসব জরিপ স্থানগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৩২ ডেসিবল শব্দ নথিভুক্ত হয় গুলশান-২ এলাকায় এবং সর্বনিম্ন শব্দ রেকর্ড হয়েছিল ৩১ দশমিক ৭ ডেসিবল জাতীয় সংসদ এলাকায়।

গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, সমগ্র ঢাকা শহরকে মিশ্র এলাকার সঙ্গে তুলনা করলে ১০টি স্থানেই ৮২ শতাংশ সময় শব্দের আদর্শ মান ৬০ ডেসিবলের ওপর শব্দ পাওয়া গেছে।

ক্যাপস এর গবেষণা অনুযায়ী, ঢাকা শহরের ১০টি স্থানের বায়ুমানও ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে সংবাদ সম্মেলনে
জানানো হয়।

অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, “১০টি স্থানের মধ্যে সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ শাহবাগ এলাকায়; সেখানে বাতাসের অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা ২.৫ এরগড় বার্ষিক উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৮৫ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ আদর্শমান ১৫ মাইক্রোগ্রাম থেকে ৫ দশমিক ৬ গুণ বেশি।

আর সর্বনিম্ন বায়ুদূষণ হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়; সেখানে বস্তুকণা ২.৫এর গড় বার্ষিক উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটার ৭০ মাইক্রোগ্রাম। আদর্শমান থেকে ৪.৬ গুণ বেশি।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার ঢাকা শহরের বায়ু ও শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশগত প্রমশন ব্যবস্থা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার ঢাকা শহরের বায়ু ও শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশগত প্রমশন ব্যবস্থা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।

বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম বস্তুকণা ২.৫ এবং অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা ১০ এর ওপর।

ক্যাপস এর পরিচালক বলেন, “শীতকালে দূষণের আধিক্য বেশি। যেখানে বস্তুকণা ২.৫ এর পরিমাণ গড়ে ১২৭ মাইক্রোগ্রাম অর্থাৎ ৮.৪ গুণ বেশি এবং বস্তুকণা ১০ এরপরিমাণ গড়ে ১৬২ মাইক্রোগ্রাম অর্থাৎ ৩.২ গুণ বেশি।

“বায়ু দূষণের তীব্রতায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে প্রাক-বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী সময়। বায়ুমান ভালো ছিল বর্ষাকালে, দূষণ তুলনামূলকভাবে বর্ষাকালে কম হয়েছে। বস্তুকণা ২.৫ এর পরিমাণ গড়ে ৩৯ মাইক্রোগ্রাম অর্থাৎ ২.৬ গুণ বেশি এবং বস্তুকণা ১০ এর পরিমাণ গড়ে ৬২ মাইক্রোগ্রাম অর্থাৎ ১.২ গুণ বেশি ছিল।”

পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপক
জানান, ঢাকা শহরের বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ চলমান নির্মাণ প্রকল্প।

ইউএসএইডের অর্থায়নে ওয়াটারকিপার্স
বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ
বিভাগ এবং বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে গবেষণাটি
পরিচালিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ
জামিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের
অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম।