সিরডাপের মহাপরিচালক ডা. চেরদসাক
ভিরাপা রোববার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক
২০২১’ তুলে দেন।
পল্লী উন্নয়নের স্বীকৃতি পেয়ে শেখ
হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি এটা আমার বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য। আমি তাদের জন্য এ
পদক উৎসর্গ করছি। এ পদক প্রাপ্তির জন্য আমাকে মনোনয়ন করা মানে বাংলাদেশকে মনোনয়ন
করা।
“সিরডাপ সব সময় তাদের সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে পল্লী
উন্নয়নের ওপর কাজ করে। সেখান থেকে একটা পুরস্কার পাওয়া, এটা শুধু আমার জন্য নয়,
আমার দেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক।”
জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও
দাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা সিরডাপ এশিয়া ও প্রশান্ত
মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমন্বিত পল্লী উন্নয়নে কাজ করে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ
১৫টি দেশ এর সদস্য।
পল্লী উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে
ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব সময় লক্ষ যে এ দেশের উন্নয়নটা তৃণমূল থেকে
হবে। গ্রাম থেকে হবে। ভিলেজ থেকে হবে।
ছবি: পিএমও
“আর সেই লক্ষ্য সামনে নিয়ে আমরা আমাদের পরিকল্পনা
নিয়েছি। যখনই সরকার গঠন করেছি আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
সরকারপ্রধান বলেন, “পল্লী উন্নয়নটা. অর্থাৎ
গ্রামের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করতে পারলে দেশের উন্নয়ন হয়। সেটাই আমরা
বিশ্বাস করি। দেশের উন্নয়ন করতে হলে একেবারে তৃণমূলের মানুষকে বাদ দিয়ে কখনও
উন্নয়ন হতে পারে না।
“আজকে আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম
তৃণমূলকে ঘিরে। যেমন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব, আমাদের ডিজিটাল সেন্টার প্রথমে কিন্তু
সেই চর কুকরিমুকরি থেকে শুরু করি। অর্থাৎ একেবারে রিমোট এলাকা সেখানে আমরা শুরু
করি।”
গ্রামের মানুষকে সাবলম্বী করতে ‘একটি বাড়ি একটি
খামার’ প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ কর্মসূচি করা হয়েছে বলে
জানান তিনি।
গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সরকারের
পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “স্বাস্থ্য সেবার দেওয়ার জন্য কমিউনিটি
ক্লিনিক করে দিয়েছি। যেখানে গ্রামের মানুষ পায়ে হেঁটে স্বাস্থ্য সেবা পেতে পারে।
ছবি: পিএমও
“শিক্ষার জন্য প্রতি দুই কিলোমিটারের মধ্যে একটি
করে প্রাথমিক বিদ্যালয় করা। যাতে করে ছেলেমেয়েরা হেঁটে স্কুলে যেতে পারে। আমাদের
প্রাইমারি শিক্ষা যেমন অবৈতনিক, পাশাপাশি আমাদের নারী শিক্ষাও অবৈতনিক। সেই সাথে
তৃণমূলে মায়েরা যখন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠায় মায়েদের নামে আমরা বৃত্তি দিই।”
সরকার ‘প্রায় শতভাগ মানুষের জন্য’ সুপেয় পানি এবং
স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করতে পেরেছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য-শিক্ষা, বাসস্থান এগুলো
মানুষের মৌলিক চাহিদা, আমাদের এখন যত মানুষ গৃহহীন আছে অর্থাৎ ভূমিহীন-গৃহহীন,
তাদেরকে আমরা বিনা পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি। যাতে একটা ঘর পেলে সেটাই মানুষের
কর্মসংস্থান হয়।”
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে
সহায়তার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা
এগুলো আমরা দিচ্ছি, সেটাও মানুষের আর্ত সামাজিক কাজে লাগে। এগুলো সম্পূর্ণ আমাদের
নিজস্ব পরিকল্পনা, নিজস্ব চিন্তা ভাবনার ফসল। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে।”
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও
সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন এ
অনুষ্ঠানে।