ক্যাটাগরি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক

রোববার এক সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিদ্যমান রেপো সুদহার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশে উন্নীত করেছে।

তবে রিভার্স রেপো আগের মত ৪ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। স্পেশাল বা বিশেষ রেপো সুদহারও ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ বহাল রাখা হয়।

নতুন এ হার অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে সার্কুলারে।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই নীতি সুদহার কমিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

ওই সময় করোনাভাইরাস মহামারীতে অর্থের জোগান বাড়াতে রেপো (পুনঃক্রয় চুক্তি) ও রিভার্স রেপোর সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ‘সম্প্রসারণমুখী’ নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারে পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে এপ্রিলে দেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ হারে, যা ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।   

রেপো সুদহার হিসেবে পরিচিত নীতি সুদহার বাড়ানোর অর্থ হল কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে ব্যাংকগুলোকে এখন বাড়তি সুদ দিতে হবে। ব্যাংকগুলো সাধারণত এক থেকে সাত দিনের
জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এমন সুদে টাকা ধার করে থাকে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বাজারে তারল্য ও বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে।

রোববার নীতিসুদ হার পরিবর্তন আনতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত মনিটারি পলিসি কমিটির বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

ওই বৈঠক প্রায় দুই বছর পর আবার রেপো বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে নীতি সুদহার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।

রেপো হার বাড়ানোর বিষয়ে রোববার রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “চলমান করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা কার্যকর হওয়ার প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা হ্রাস এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব ও মুদ্রানীতি গ্রহণের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

“আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সকল ধরনের পণ্য (খাদ্য ও খাদ্য-বহির্ভূত) মূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিস্থিতি এবং সার্বিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, দেশের মূল্যস্ফীতি সীমিত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৪.৭৫ ভাগ হতে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে শতকরা ৫.০০ ভাগে পুনঃনির্ধারণ করা হয়।“

২০২০ সালের ২৯ জুলাই রেপোর সুদহার কমানোর আগে এ হার ছিল ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ।

ওই দিন নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় রেপোর হার নতুন করে ঠিক করা হয়। ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে এ হার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়। আর রিভার্স রেপোর সুদহার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস কমিয়ে নামিয়ে আনা হয় ৪ শতাংশে।

গত ১৮ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে ৯৯৭ কোটি টাকা চাহিদার বিপরীতে ৮৩১ কোটি টাকা ধার দিয়েছে ব্যাংকগুলোকে।

ব্যাংকের তাৎক্ষণিক তারল্য চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে টাকা ধার দেয়। সাধারণত প্রতিদিন বিকালে ব্যাংলাদেশ ব্যাংক চাহিদার বিপরীতে এ পদ্ধতিতে ব্যাংকগুলোকে টাকা দিয়ে থাকে।

আরও পড়ুন:

ডলারের বিপরীতে আরও সস্তা হল টাকা
 

মহামারীকালে অর্থ জোগান বাড়াতে রেপো হার কমিয়ে নতুন মুদ্রানীতি