রাশিয়ার সর্ববৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম এর সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ বিষয়ে সার্বিয়ার আগে থেকেই ১০ বছরের চুক্তি আছে। যেটির মেয়াদ আগামী ৩১ মে শেষ হওয়ার কথা।
তার আগেই নতুন করে আরো তিন বছরের জন্য চুক্তির বিষয়ে একমত হতে পেরে দারুণ খুশি সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বুচিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি এখনই গ্যাসের দামের বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। এ বিষয়ে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সব ঠিক করে নেয়া হবে।”
গ্যাসের দামের বিষয়ে তথ্য না দিলেও এবারের গ্যাসের দাম তেলের দামের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকবে এবং এ বিষয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একমত হয়েছেন বলেও জানান।
জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রমের ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক রাশিয়া সরকার।
আগামী মাসের শুরুর দিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সার্বিয়া সফর করবেন। তার ওই সফরে দুই দেশের মধ্যে গ্যাস চুক্তিটি সই হতে পারে।
ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়া এরইমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশ ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।
বুচিক বরাবর বলে আসছেন, তিনি সার্বিয়াকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত করতে চান। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাকে রাশিয়ার সঙ্গে সার্বিয়ার সম্পর্ক জোরদার করতে দেখা গেছে।
ফিনল্যান্ডেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করল রাশিয়া
বুলগেরিয়া ও পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিল রাশিয়া
ইউক্রেইনে রাশিয়ার হামলা নিয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে নিন্দা প্রকাশেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বুচিক। এই হামলার জেরে পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও সেই দলে যোগ দেয়নি সার্বিয়া।
বরং বুচিকসহ সার্বিয়ার অন্য নেতাদের অভিযোগ, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য বেলগ্রেডের ওপর চাপ দিচ্ছে পশ্চিমারা। তারা বলেছেন, বলকান দেশগুলোকে অবশ্যই এই ধরনের চাপ প্রতিহত করতে হবে। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার লক্ষ্য ব্যাহত হলেও তা করতে হবে।
সার্বিয়ায় রাশিয়ার গ্যাস মজুদ রাখার ব্যবস্থা আরো বাড়ানোর বিষয়ে তিনি পুতিনের সঙ্গে আলাপ করেছেন বলেও জানান বুচিক। তাকে ইউরোপে পুতিনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে বিবেচনা করা হয়।
তিনি বলেন, ‘‘পুতিন আমাকে বলেছেন, যদি আমার মনে হয় এ বিষয়ে আরো আলোচনা করা দরকার তবে যেন আমি তাকে ফোন দেই।”
২০০৮ সাল থেকে সার্বিয়া তাদের তেল ও গ্যাস সেক্টর দেখভালের দায়িত্ব রাশিয়ার কোম্পানিগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়েছে। গ্যাজপ্রম নেফত এবং গ্যাজপ্রম মিলে দেশটির একমাত্র তেল কোম্পানিটির বেশিভাগ শেয়ারের মালিক।
এছাড়া, সার্বিয়ার একমাত্র গ্যাস মজুদ ক্ষেত্রটিরও বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক গ্যাজপ্রম।