ক্যাটাগরি

শেখ হাসিনার চেয়ে নিরপেক্ষ কে আছে, প্রশ্ন পরশের

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের কিং অব চিটাগাং কমিউনিটি সেন্টার প্রাঙ্গণে নগর যুবলীগের সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।

‘সুশীল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে যে গণতন্ত্র সিন্দুকে বন্ধ ছিল’ তা শেখ হাসিনা মুক্ত করেছেন মন্তব্য করে পরশ বলেন, “সুশীল সমাজের একটি অংশ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তৎপর। তারা ১/১১ এর কুশীলবদের সক্রিয় করতে চায়। জাতীয় সরকারের ধারণা নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে।

“কিছু কিছু গণমাধ্যম এখন বিরোধীদলের ভূমিকায় নেমেছে। সব মিলিয়ে দেশকে সংকটময় ও সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে মরিয়া একটি মহল।”

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সমাজের কিছু ‘বিশিষ্টজন ধেই ধেই’ করে জিয়াউর রহমানের সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন মন্তব্য করে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে পরশ বলেন, “সেদিন তারা হত্যা-মানবাধিকার নিয়ে কিছু বলেনি। প্রশ্ন তোলেনি।

“নব্বইয়ের পর গণতন্ত্রের নাটাই সুশীলদের হাতে ছিল। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে কিছু গণমাধ্যম ও সুশীলরা- তখন যাদের চেয়েছে, তাদের ক্ষমতায় এনেছে পরপর ৩ মেয়াদে। গণতন্ত্রের নামে ক্ষমতা চলে গিয়েছিল তখন অগণতান্ত্রিক সরকারের হাতে। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করা হয়, কারণ জনগণের জাগরণ সুশীলদের ভীত করেছিল।”

চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ

চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি নাকচ করে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, “এরপর এত দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা- তারা কীভাবে সহ্য করবে! তাই ১/১১ এর কুশীলবরা গ্রিন রুমে অপেক্ষা করছে আরেকটি ১/১১ ঘটাতে।”

পরশ বলেন, “আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। তার থেকে দেশে কে বেশি নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য ও ন্যায়পরায়ণ?”

সমাজে সুযোগসন্ধানী কিছু মানুষ আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এদের কারণে গণতান্ত্রিক সরকার সংকটে পড়ে। …আর কিছু আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী আছে যারা রাজনীতিবিদদের ছেড়ে সুশীলদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করে। এদেশের উন্নয়ন নয়, বাজার দখলই তাদের স্বার্থ।”

আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে সংবিধান অনুসারে হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেন, “যারা জাতীয় সরকারের কথা বলছে, তারা অসাংবিধানিক পন্থা খুঁজছে; কিছু বুদ্ধিজীবী, সুশীল ক্ষমতায় গিয়ে মন্ত্রী-উপদেষ্টা হতে চায়। তারাই জাতীয় সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে। তা দিবাস্বপ্ন। কখনও সফল হবে না।”

যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুর করিম সেলিম বলেন, “সংবিধান অনুসারে ভারত, লন্ডন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডায় যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবে হবে। ইয়াজউদ্দিনের মত কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না।

“আর জাতীয় সরকারের কথা বলে! জাতীয় সরকার করেছিলেন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে নিয়ে-বাকশাল। তোরা বাকশাল চাস?”

চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুর করিম সেলিম

চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুর করিম সেলিম

নির্দলীয় সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে না আসার যে ঘোষণা দিয়েছে, সে বিষয়ে পরশের চাচা সেলিম বলেন, “তারা নির্বাচনে এলে আসবে, না এলে না আসবে। নির্বাচনে না এলে তাদের দশা ন্যাপের মত হবে।”

অন্যদের মধ্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন, নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন।

নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, মাহবুবুল হক সুমন ও দিদারুল আলম চৌধুরীর সঞ্চালানায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন হয়।