চুক্তির মেয়াদ শেষে সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন বার্তায় রিয়ালকে বিদায় জানান ইসকো।
“৯ বছর পর রিয়াল মাদ্রিদে আমার পথচলা শেষ করলাম। এটা এমন এক ক্লাব, যারা আমার শৈশবের সব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাকে সম্ভব করেছে।”
৩০ বছর বয়সী ইসকোর সঙ্গে যে চুক্তি নবায়ন করা হচ্ছে না, কদিন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। আপাতত ফ্রি এজেন্ট হিসেবে নতুন ঠিকানা খুঁজতে হবে ৩০ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে।
২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত আরেক স্প্যানিশ ক্লাব মালাগায় খেলে রিয়ালে যোগ দিয়েছিলেন ইসকো। বিদায়বেলায় তিনি স্মরণ করলেন সেই সময়ের কথা, কেউ কেউ তাকে তখন নিরুৎসাহিত করেছিল।
“যখন আমি মালাগায় ছিলাম এবং জানতাম আমাকে যেতে হবে; অন্য আরেক ক্লাবে যোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময় রিয়াল মাদ্রিদ যোগাযোগ করল আর এই দলকে তো না বলা যায় না, কিছু ব্যতিক্রম অবশ্য সবসময়ই থাকে।”
“মনে আছে, আমার কাছের মানুষরা বলতো, “মাদ্রিদে যাবে! ওরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেনি অনেক বছর হলো; কিন্তু আমার মন বলছিল, সাফল্যটা খুব শিগগির আসবে” এবং তারপরই লা দেসিমা এলো, এরপর বাকিটা তো ইতিহাস।”
২০১৩ সালের জুনে রিয়ালে যোগ দিয়ে প্রথম মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসেন ইসকো। কার্লো আনচেলত্তির কোচিংয়ে সেই মৌসুমে লা দেসিমা সহ তিনটি শিরোপা জেতে দলটি।
এরপর শুধুই এগিয়ে চলা আর সাফল্য ছোঁয়ার পালা। মাঝে খারাপ সময় এসেছে, গত কয়েক মৌসুমে তো শুরুর একাদশে জায়গাও হারান। তবে কখনও কোচের আস্থা হারাননি পুরোপুরি।
অবশেষে শেষ হলো সাফল্যমণ্ডিত সেই পথচলা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের হয়ে ৩৫৩ ম্যাচ খেলে তিনি গোল করেছেন ৫৩টি, সঙ্গে অ্যাসিস্ট আছে ৫৬টি।
এখানে মোট ১৯টি শিরোপা জিতেছেন ইসকো। যার মধ্যে রয়েছে পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও তিনটি লা লিগা।
সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে খেলেছেন ১৭ ম্যাচ। বেশিরভাগ সময়ই তাকে থাকতে হয়েছে বেঞ্চে।
কোচ-সতীর্থদের পাশাপাশি ক্লাবের সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসকো। বিশেষভাবে উল্লেখ করেন প্রিয় সমর্থকদের কথা, যারা এখানে প্রথম দিন থেকে তাকে আপন করে নিয়েছিল।
আগামীর জন্য প্রিয় ক্লাবকে জানিয়েছেন শুভকামনা। তার বিশ্বাস, ১৪ এর পর ১৫তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা আসতেও দেরি নেই।
“গত রাতে আমি এক বন্ধুকে বলছিলাম যে সিবেলেসে গড়ে তোলা উদযাপনের সজ্জাগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে কেন। কারণ ১৫তম শিরোপা আসছে।”
সিবেলেস স্কয়ারে রিয়াল ঐতিহ্যগতভাবে ক্লাবের সাফল্য উদযাপন করে থাকে। মাসখানেক আগে লা লিগা শিরোপা উদযাপনের পর রোববার আবারও তারা সেখানে জড়ো হয়েছিল ইউরোপের সিংহাসনে বসার আনন্দ সমর্থকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে। সবশেষবারের মতো সেই উৎসবে ছিলেন ইসকোও।