মামলা খারিজের আবেদন নাকচ করে দিয়ে অ্যাপলের
সিডিয়ার অভিযোগের উত্তর দেওয়ার জন্য ২১ দিন সময় দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার বিচারক ইয়োভান
গনজালেস রজার্স।
২০২০ সালে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন
সিডিয়ার ডেভেলপার জে ফ্রিম্যান। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, অ্যাপল আইওএস অ্যাপের বিপণন
ও লেনদেনে ‘বেআইনিভাবে একচেটিয়া ব্যবসা’ চালাচ্ছে, যার ফলে তৃতীয়-পক্ষীয় অ্যাপস্টোরগুলো
অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতার সুযোগ থেকে ‘বঞ্চিত’ হচ্ছে।
অ্যাপলের নিজস্ব অ্যাপ স্টোর প্রতিষ্ঠিত
হওয়ার আগেই যাত্রা শুরু হয়েছিল সিডিয়ার। সিডিয়া থেকে তৃতীয় পক্ষীয় অ্যাপ খুঁজে ডাউনলোড
করা যেত জেইলব্রেক করা ডিভাইসে। ২০১৮ সালে সিডিয়া বন্ধ করে দেন ফ্রিম্যান।
অন্যদিকে, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের আইনি
দ্বন্দ্বের সঙ্গেও অপরিচিত নন ক্যালিফোর্নিয়ার বিচারক ইয়োভান গনজালেস রজার্স। সর্বশেষে,
অ্যাপল বনাম এপিক গেইমসের মামলায় মিশ্র রায় দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি।
অ্যান্ট্রিটাস্ট মামলার চার বছরের সময়
সীমার কথা উল্লেখ করে জানুয়ারি মাসেই ফ্রিম্যানের মামলা খারিজ করে দিয়েছিলেন তিনি।
তবে, ফ্রিম্যানকে অভিযোগ সংশোধন করে দাখিল করার সুযোগ দিয়েছিলেন গনজালেস রজার্স। ঠিক
সে কাজটিই করেছেন ফ্রিম্যান।
সংশোধিত অভিযোগে ফ্রিম্যান বলেছেন, ২০১৮
সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ‘আরও আক্রমণাত্মক’ হয়েছে অ্যাপল। আইওএসে অ্যাপল এমন কিছু
পরিবর্তন এনেছে যাতে আইফোনের জন্য বিকল্প অ্যাপ সরবরাহের সুযোগ হারিয়েছে সিডিয়াসহ অন্যান্য
অ্যাপস্টোরগুলো।
এবারও মামলাটি খারিজ করে দেওয়ার আবেদন
করেছিল অ্যাপল। তবে, সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন গনজালেস রজার্স। এ প্রসঙ্গে অ্যাপলে
সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো উত্তর পায়নি প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ।
২০২০ সালে অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে ফোর্টনাইট
মুছে দেওয়ার পর মামলা করেছিল এপিক গেইমস। ফোর্টনাইটের বিকল্প লেনদেন সেবা নিয়েই আপত্তি
ছিল অ্যাপলের। গেইমের অভ্যন্তরীণ লেনদেন থেকে ৩০ শতাংশ কেটে রাখতো অ্যাপল। কিন্তু ফোর্টনাইটের
বিকল্প লেনদেন ব্যবস্থার কারণে অ্যাপলকে ভাগ না দিয়েই কামাইয়ের পুরোটা নিজের পকেটে
রাখার সুযোগ পেতো গেইমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এপিক।
একই সময়ে প্রায় একই অভিযোগে গুগলের বিরুদ্ধেও
মামলা করেছে এপিক গেইমস। মামলার শুনানি শুরু হবে ২০২৩ সালে। অন্যদিকে, মে মাসের শুরুতেই
একই অভিযোগে গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ডেটিং অ্যাপ টিন্ডারের মূল প্রতিষ্ঠান ম্যাচ
গ্রুপ।
কেবল অ্যাপ নির্মাতারা নয়, বিভিন্ন সরকারি
সংস্থাগুলোর নজরেও পড়েছে অ্যাপল। ডাচ ডেটিং অ্যাপগুলোকে নিজস্ব লেনদেন ব্যবস্থা ব্যবহারের
সুযোগ না দেওয়ায় অ্যাপলকে একাধিকবার জরিমানা করেছে নেদারল্যান্ডস। দক্ষিণ কোরিয়া নতুন
একটি আইন পাশ করিয়েছে যাতে তৃতীয় পক্ষীয় লেনদেনের
সুযোগ রাখতে হবে গুগল ও অ্যাপল উভয় প্রতিষ্ঠানকে।
‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া প্রথমসারির
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর লাগাম টানতে তৎপরতা বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
আগামী বছরেই নতুন ‘ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট’ কার্যকর করার কথা রয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের।
অন্যদিকে ‘ওপেন অ্যাপ মার্কেটস অ্যাক্ট’
নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।