গ্যাস না থাকায় কামরাঙ্গীরচরসহ আশপাশের কয়েক লাখ মানুষ যার যার মত করে জ্বালানি যোগাড় করে নিয়েছেন। স্থানীয় একজন বাসিন্দা ক্ষোভ থেকে বললেন, “গ্যাসের আর দরকার কী?”
ওই এলাকায় বৈধ সংযোগের চেয়ে অবৈধ সংযোগ কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় এবং বৈধদেরও বিল বকেয়া থাকায় গত ১০ মে থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
তিতাস গ্যাসের ওই জোনে বৈধ গ্রাহক ১২ হাজার; অথচ সংযোগ এক লাখেরও বেশি। অর্থাৎ প্রায় ৯০ হাজার গ্রাহক অবৈধভাবে সংযোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি বৈধ গ্রাহকদের ৮৩ কোটি টাকার বিল বকেয়া।
বিশাল এলাকাজুড়ে গ্যাস বন্ধ রাখায় ভোগান্তিতে পড়ে লাখো মানুষ। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে তিতাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
পরে গত ১৯ মে কামরাঙ্গীরচরে মতবিনিময় সভা করেন তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ। সেখানে বলা হয়, অবৈধ সংযোগ উচ্ছেদ করে গ্যাস ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
এর পর শুরু হয় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ। একইসঙ্গে তিতাসের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বিক্ষোভ চলতে থাকে।
কবে নাগাদ এই অভিযান শেষ হবে সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিতাসের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বলতে পারবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিতাস কর্তৃপক্ষ তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। কবে শেষ করবেন আমরা বলতে পারছি না।”
সহসা গ্যাস ফিরছে না কামরাঙ্গীরচরে
অবৈধদের শিক্ষা দিতে গ্যাস বন্ধ ঢাকার এক এলাকায়
তিতাসের ওই এলাকার উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মো. নজীবুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা উপরের মহলের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিয়ান চালিয়ে যাচ্ছি। কবে শেষ হবে সে ব্যাপারে কিছু জানি না।”
কবে ওই এলাকায় গ্যাস সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হবে তার সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিতাসের পরিচালক (অপারেশন) মো. সেলিম মিয়াও।
যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের এমডি স্যার এ বিষয়ে বলতে পারবেন। তিনি বিষয়টি সরাসরি দেখভাল করছেন।”
তিতাসের এমডি হারুনুর রশীদের সঙ্গে একাধিকাবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এই অনিশ্চয়তার মধ্যে কামরাঙ্গীরচর জোন সংলগ্ন গ্যাসের সংযোগ না থাকা এলাকার মানুষজন কোরেসিনের স্টোভ, ইনডাকশন চুলা, সিলিন্ডার, লাকড়ি এসব দিয়ে নিজেদের দৈনন্দিন কাজ মেটাচ্ছেন।
হাজারীবাগ মডেল টাউন এলাকার বাসিন্দা আলেয়া সুলতানা সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, তারা এখন সিলিন্ডার কিনে রান্নার কাজ চালাচ্ছেন। খরচ বেড়ে গেলেও আর কোনো উপায় নেই তার।
আর স্থানীয় বাসিন্দা সাদিউর রহমান বললেন, “আর কত দিন কে জানে? ইনডাকশন চুলা কিনেছি। গ্যাস দিয়ে আর কী হবে? কর্তৃপক্ষ এটা বুঝতে পারছে না যে সাধারণ মানুষ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছে। তারা চিরুনি অভিযান কেন চালাচ্ছে না? ওটা করলেইতো সমাধান দ্রুত হয়।”