ক্যাটাগরি

এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের ইভিপি আমিনুল ইসলাম এবং ব্যাংকটির সাতক্ষীরা
শাখা ব্যবস্থাপককে গ্রেপ্তার করতে মঙ্গলবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও
বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদেশে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আগামী রোববার উচ্চ আদালতে হাজির করতে বলা
হয়েছে ঢাকার গুলশান ও সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে।

একটি রিট আবেদনের শুনানিতে আদালতের এই আদেশ আসে। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে
শুনানি করেন আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়েস
আল হারুনী।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল হারুনী সাংবাদিকদের জানান, সাতক্ষীরার শফি
এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিউর রহমান এবি ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে একটি ঋণ নিয়েছিলেন।
ঋণের বিপরীতে তিনি একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট চেয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে আবেদন করেন। কিন্তু
ব্যাংক থেকে তাকে ওই স্টেটমেন্ট দেওয়া হয়নি। ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

তখন শফিউর রিট আবেদন করেন জানিয়ে তিনি বলেন, “শুনানির
একপর্যায়ে গতকাল (সোমবার) হাই কোর্ট আমাকে এবি ব্যাংকের হেড অফিসে ও সাতক্ষীরা শাখার
ম্যানেজারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে বলেন। আমি হেড অফিসের এভিপি আমিনুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা
ব্রাঞ্চের ম্যানেজারকে আদালতের মৌখিক আদেশের কথা জানিয়ে দিই। তাদের গ্রাহক সফিউর রহমানকে
ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেওয়ার কথা বলি। একই সাথে আদালতের আদেশ অনুয়ায়ী এভিপি আমিনুল ইসলামকে
আজ কোর্টে হাজির থাকার কথা বলেছিলাম।

“রিটকারী গতকালই এবি ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখায় গিয়েছিলেন
স্টেটমেন্ট আনতে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। আদালতের আদেশের পরও ব্যাংক স্টেটমেন্ট
না দেওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারের এই আদেশ দিয়েছে আদালত।”

সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় ঘুর্ণিঝড় আইলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত পানি উন্নয়ন
বোর্ডের (পাউবো) অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পসহ চারটি প্রকল্পের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান
মেসার্স শফি এন্টারপ্রাইজ। চার প্রকল্পের মধ্যে দুটি প্রকল্পের কাজের অনুকূলে ঠিকাদার
মো. শফিউর রহমান শফি এবি ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখা থেকে ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর ৭০ লাখ
এবং ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর ৭৫ লাখ, মোট ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ‘গতি ঋণ’ নেন।

ঋণের শর্ত অনুযায়ী ব্যাংকের অনুকুলে চেক দিয়ে প্রকল্পের বিল (পাওনা)
পরিশোধ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় চেকের মাধ্যমে সে বিল জমা
হলে বিলের একটি থেকে ৪০ শতাংশ এবং আরেকটি থেকে ৪৫ শতাংশ ঋণ সমন্বয়ে করে কেটে রাখবে
ব্যাংক। বাকি টাকা ঠিকাদার শফিউর রহমান শফিকে দিয়ে দেওয়া হবে। প্রকল্পের কাজ শেষে ২০১৭
সালে দুই প্রকল্পের সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করে পাউবো।

শর্ত অনুযায়ী শফিউর রহমানের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও
এবি ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখা শফিউরকে জানায় ঋণ পরিশোধে এখনও ১ কোটি ১৮ লাখ ৪১ হাজার
৪৪৯ টাকা বাকি আছে তার। এ টাকা তাকে পরিশোধ করতে হবে। পরে এ নিয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলাও
করে এবি ব্যাংক।

এ অবস্থায় পাউবো কোন তারিখে কত টাকার চেক এবি ব্যাংকে দিয়েছে, তার বিস্তারিত
বিবরণ চেয়ে ব্যাংটির সংশ্লিষ্ট শাখা আবেদন করেন শফিউর রহমান শফি। কিন্তু ওই ব্যাংক
শাখা থেকে জানানো হয় ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তাকে ঋণের সমুদয় বিবরণ দেওয়া হবে না।

এ অবস্থায় ব্যাংক ঋণের বিবরণ (স্টেটমেন্ট) দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত
১৮ মে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ঠিকাদার শফিউর রহমান শফি।