ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে ইয়েলৎসিনের সহায়ক ভূমিকা ছিল।
ইউমাশেভ ছিলেন অবৈতনিক উপদেষ্টা এবং পুতিনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তার প্রভাব খুবই সীমিত ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তার প্রস্থানে ই্য়েলৎসিন শাসনামলের সঙ্গে পুতিন প্রশাসনের যোগসূত্রের শেষ সংযোগগুলোর একটিও কাটা পড়ল।
পুতিন এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তার সশস্ত্রবাহিনীকে ইউক্রেইনে হামলার নির্দেশ দেন।
পশ্চিমা সরকারগুলো মস্কোর এ আক্রমণকে অন্যায্য আগ্রাসন হিসেবে দেখছে, অন্যদিকে মস্কো একে বলছে ‘বিশেষ অভিযান’, যা ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলের রুশভাষীদের রক্ষায় জরুরি হয়ে পড়েছিল।
এর মধ্যেই মার্চে ইয়েলৎসিন আমলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আনাতোলি চুবাইস ক্রেমলিনের বিশেষ দূতের পদ ছাড়েন। চলতি মাসে জাতিসংঘে রাশিয়া মিশনের এক কর্মকর্তাও যুদ্ধের কারণে চাকরি ছেড়ে দেন।
ইউমাশেভের উপদেষ্টার পদ ছাড়া নিয়ে মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের সাড়া মেলেনি। এ ব্যাপারে ইউমাশেভেরও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে বরিস ইয়েলৎসিন প্রেসিডেন্সিয়াল সেন্টার ফাউন্ডেশনের প্রথম উপনির্বাহী পরিচালক লুদমিলা তিলিন জানান, ইউমাশেভ এপ্রিলেই ক্রেমলিনের উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দিয়েছেন।
ইউমাশেভ ইয়েলৎসিন প্রেসিডেন্সিয়াল সেন্টার ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডেরও সদস্য।
কেন তিনি পদ ছাড়লেন, এই প্রশ্নের জবাবে লুদমিলা বলেন, “(পদ ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে) তারই উদ্যোগ ছিল।”
ইউমাশেভের চিন্তা সম্বন্ধে অবগত দ্বিতীয় আরেক ব্যক্তিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এপ্রিলেই প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টার পদ থেকে ইয়েলৎসিন জামাতা সরে যান।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ইয়েলৎসিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সেসময় ইউমাশেভ ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ও পরে চিফ অব স্টাফেরও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ইউমাশেভ ইয়েলৎসিনের মেয়ে তাতিয়ানাকে বিয়ে করেন।
১৯৯৭ সালে তিনি যখন প্রেসিডেন্টের প্রশাসন চালাচ্ছেন, তখন সাবেক কেজিবি গুপ্তচর পুতিনের ক্রেমলিনের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ পদে পদোন্নতি হয়। আগের বছরই পুতিনকে ক্রেমলিনে মধ্যম পর্যায়ের একটি প্রশাসনিক চাকরি দেওয়া হয়েছিল।
ডেপুটি চিফ অব স্টাফ পদে ওই পদোন্নতিই পুতিনকে ইয়েলৎসিনের উত্তরসূরী হওয়ার পথে নিয়ে এসেছিল।
ইয়েলৎসিন পদত্যাগ করলে ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পুতিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
যত দিন গেছে, পুতিন ততই ইয়েলৎসিনের নীতি থেকে সরলেও সাবেক প্রেসিডেন্টের পরিবারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই বজায় ছিল।
২০২০ সালের জানুয়ারিতেও পুতিন ইয়েলৎসিনের মেয়ে তাতিয়ানাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে তার বাড়ি গিয়েছিলেন বলে জানাচ্ছে ক্রেমলিনের ওয়েবসাইট।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউমাশেভ ও তাতিয়ানার মেয়ে মারিয়া ইনস্টাগ্রামে ইউক্রেইনের পতাকা পোস্ট করেছিলেন, যাতে লেখা ছিল ‘যুদ্ধ নয়’, সঙ্গে ছিল হৃদয় ভেঙে যাওয়ার ইমোজি।