মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে টেরা লুনার দাম নেমে এসেছিল দশমিক শূন্য নয় সেন্টে। টেরা লুনা ধসের সঙ্গে সঙ্গেই ধস নেমেছিল টেরা ব্লকচেইনের স্টেবল কয়েন ‘টেরাইউএসডি’র দামেও। টেরা লুনা এবং টেরা ইউএসডির ধস ক্রিপ্টো বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে বলে উঠে এসেছে সিএনবিসির প্রতিবেদনে।
গত সপ্তাহে টেরা লুনাকে ‘টেরা ২.০’ হিসেবে ফিরিয়ে আনতে ভোট দেন ব্লকচেইনটির সমর্থকরা। সংশ্লিষ্ট স্টেবলকয়েনটি ফিরিয়ে আনতে ভোট দেননি তারা।
তবে, টেরা লুনার দ্বিতীয় জীবনেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। শনিবার টেরা ২.০-এর সর্বোচ্চ দাম ছিল ১৯ ডলার ৫৩ সেন্ট। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সেই দাম নেমে আসে চার ডলার ৩৯ সেন্টে। তারপর ক্রিপ্টো মুদ্রাটির দাম পাঁচ ডলার ৯০ সেন্টে স্থিতিশীল হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারের বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কয়েনমার্কেটক্যাপ।
স্টেবলকয়েনের দাম নির্ধারণ করা হয় মূল ধারার কোনো অর্থ বা স্বর্ণের মতো মূল্যবান সম্পদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। টেরাইউএসডির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল মার্কিন ডলারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। গেল মাসের ক্রিপ্টো বাজারের মন্দার প্রভাব পড়েছিল টেরা লুনার ওপর। টেরা লুনার দামে ধস নামার পর সংশ্লিষ্ট স্টেবলকয়েনটি থেকেও সরে আসতে শুরু করেন বিনিয়োগকারীরা।
বাজারে ধস নামার আগে এক সময়ে সর্বোচ্চ চার হাজার কোটি ডলার মূল্যের টেরা লুনার সরবরাহ ছিল ক্রিপ্টো বাজারে।
ব্লকচেইনের সমর্থকরা টেরা লুনাকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, এরইমধ্যে বাইবিট, হুওবি এবং কুকয়েনের মতো ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জগুলোতে টেরা ২.০-এর লেনদেন শুরু হয়েছে। লুনার দ্বিতীয় সংস্করণকে মঙ্গলবারেই তালিকাভূক্ত করার কথা জানিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ বাইন্যান্স।
সিএনবিসি বলছে, দ্বিতীয় জীবন পাওয়া টেরা লুনার ব্লকচেইনের সাফল্য নিয়ে সন্দিহান বাজার বিশ্লেষকরা। ইথেরিয়াম, কার্ডানো এবং সোলানার মতো ক্রিপ্টো মুদ্রাগুলোর অবকাঠামো ‘লেয়ার ১ নেটওয়ার্ক’-এর বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে হবে টেরা ব্লকচেইনকে।
বাজারে ধস নামায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন– টেরা লুনা এবং টেরাইউএসডির এমন বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টার অংশ হিসেবে দ্বিতীয় জীবন পাওয়া ক্রিপ্টো মুদ্রাগুলো ‘এয়ারড্রপ’-এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিএনবিসি।
তবে, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের টেরায় আবারও ভরসা আসার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রকল্পটি ‘বিশ্বাস হারিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্রিপ্টো মুদ্রা এক্সচেঞ্জ ‘লুনো’র প্রধান ভিজায় আয়ার।