রায়পুর মার্চেন্টস একাডেমি (উচ্চ
বিদ্যালয়) মাঠে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলন শুরু
হয়।
এ আয়োজনের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা
সোমবারই স্কুল বন্ধের ঘোষণা দেন। তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকাল ৯টা থেকে
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিদ্যালয়ের মাঠে সমবেত হতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান
অতিথির বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন।
সম্মেলন উপলক্ষে রায়পুর পৌর এলাকায়
অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে নেতাকর্মীরা তোরণ বানিয়েছেন, ব্যানার-ফেস্টুন ও প্রদর্শনী বোর্ড
স্থাপন করেছেন। সেগুলোর বেশিরভাগই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের।
একজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার
শর্তে বলেন, “জেলা পরিষদ মিলনায়তন বা শহরের অন্য কোনো মিলনায়তনে সম্মেলন হলে স্কুল
বন্ধ রাখার প্রয়োজন হত না; প্রায় সময়ই বিদ্যালয়ের মাঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের
কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সমস্যা হয়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর মার্চেন্টস
একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “সম্মেলনের কারণে বিদ্যালয়
ছুটি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত ছুটি দেওয়া
হয়েছে। তবে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছেন।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা
এ কে এম সাইফুল হকও এই ছুটিতে সমস্যার কিছু দেখছে না।
“বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সংরক্ষিত
ছুটি থেকে স্কুল বন্ধ রাখতে পারেন। এ ছাড়া হাজার হাজার নেতাকর্মী ও মাইকের শব্দের
কারণে পাঠদানও সম্ভব হত না।”
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
ইসমাইল খোকন বলেন, “কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন করা
হচ্ছে। বিপুল লোক সমাগমের মত জায়গা আর না থাকায় এখানে করা হচ্ছে।”
রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ
সম্মেলন হয় ২০০৩ সালে। ওই কমিটিতে কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন ৬৭ জন। এর মধ্যে সভাপতিসহ
২০ নেতা মারা গেছেন। দল চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। ২০ বছর ধরে দলীয় কার্যালয়ও
নেই।
রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন
ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য
গুরুত্বপূর্ণ পদ কারা পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
তবে অধিকাংশ নেতাকর্মীই দলীয় কার্যক্রমে
গতি ফিরিয়ে আনতে নতুন নেতৃত্বের দাবি জানিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
নুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “নানা সঙ্কট মোকাবিলা করতে গিয়ে সম্মেলন করার সময় হয়ে ওঠেনি।
সম্মেলনের মাধ্যমেই কমিটি করা হবে। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। তবে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে
দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশ সবাই মেনে নিতে প্রস্তুত।”