বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত একটায় শুরু হওয়ার কথা ছিল ম্যাচটির। কিন্তু তিন দফায় পিছিয়ে সেটি মাঠে গড়িয়েছিল প্রায় ৩৬ মিনিট দেরিতে। প্রাথমিকভাবে উয়েফার পক্ষ থেকে জানানো হয়, লিভারপুল সমর্থকদের স্ট্যান্ডের দিকে দর্শকদের মাঠে ঢুকতে দেরি হওয়াই ছিল মূল কারণ।
বিষয়টি ওখানেই থেমে থাকেনি। টিকেট ছাড়াই অনেক সমর্থক জোর করে স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করে উয়েফা। অনেক জাল টিকেটধারীও ছিল বলে দাবি তাদের।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দর্শকদের উদ্দেশ্যে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে পুলিশ, যা প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়েছে। চরম বিশৃঙ্খল অবস্থায় কিছু টিকেটধারীও ঢুকতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। আয়োজকদের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে লিভারপুলের লেফট-ব্যাক অ্যান্ড্রু রবার্টসন দাবি করেন, তার এক বন্ধুও ‘ঠিক’ টিকেট থাকা সত্ত্বেও ঢুকতে পারেনি, তাকে নাকি বলা হয়েছিল ওই টিকেট জাল।
তবে লিভারপুলের পক্ষ থেকে ‘আয়োজকদের অদক্ষতার’ বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। বিপরীতে, ফ্রান্স কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উল্টো লিভারপুলকেই ঢালাওভাবে দোষ দেওয়া হচ্ছে। দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রী আমেলিয়া কুদেয়া-কিস্তেহা বলেন, রিয়ালের সমর্থকদের নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি তারা তুলনামুলক ভালোভাবে তাদের সফরে আসা সমর্থকদের সামলেছে, সেখানে লিভারপুল উল্টো তাদের সমর্থকদের ‘উসকে দিয়েছে’।
মূলত তার ওই কথার প্রেক্ষিতেই ক্ষেপেছে লিভারপুল কর্তৃপক্ষ। ক্লাবটির চেয়ারম্যান টম ওয়ার্নার চিঠি লিখে কুদেয়া-কিস্তেহাকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। ভুক্তভোগী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন, অপেশাদার ও অসম্মানজনক’ বলেছেন ওয়ার্নার।
“উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল হওয়া উচিত ক্রীড়া বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ও দর্শনীয় ইভেন্ট। আর সেখানেই কিনা সাম্প্রতিক অতীতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সবচেয়ে খারাপ দৃষ্টান্তের দেখা মিলল।”
“এই দুঃস্বপ্নের ভুক্তভোগী সমর্থকদের পক্ষ থেকে আমি দাবি জানাচ্ছি, আপনি ক্ষমা চান। ”
লিভারপুলের পক্ষ থেকে রোববার পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়।
পরে উয়েফার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এটি স্বাধীনভাবে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঘটনাবহুল সেদিনের ফাইনালে লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতাটিতে ১৪তম শিরোপা জেতে রিয়াল মাদ্রিদ।