বাংলাদেশে ইউনিসেফের টিকা
পৌঁছে দেওয়ার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘের এ সংস্থা
বলেছে, কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে।
জুন মাসে কোভিড টিকার বুস্টার
ডোজ দেওয়ার যে বিশেষ কর্মসূচি সরকার নিয়েছে, তাতেও টিকা সরবরাহ করে সহযোগিতা দিচ্ছে
ইউনিসেফ।
কোভ্যাক্স হল ন্যায্যতার
ভিত্তিতে দেশে দেশে টিকা সরবরাহের একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ, যার নেতৃত্ব দিচ্ছে এপিডেমিক
প্রিপার্ডনেস ইনোভেশন, ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (গ্যাভি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এর আওতায় দেশে দেশে টিকা পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করছে ইউনিসেফ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে যত টিকা পেয়েছে, তার ৬২ শতাংশের বেশি এসেছে কোভ্যাক্সের
মাধ্যমে।
মহামারী শুরুর পরের বছর ২০২১
সালে ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে কোভিড টিকাদান শুরু হয়। আর ইউনিসেফ কোভ্যাক্সের আওতায়
বাংলাদশে প্রথম টিকা পাঠায় ওই বছরের ১ জুনে। ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশের মাত্র
৪ শতাংশ নাগরিক দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছিল।
ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশে
টিকাদান কার্যক্রম শুরুর এক বছর পর সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য অংশীদারদের
সমন্বিত চেষ্টায় ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ কোভিড টিকার দুই ডোজ পেয়েছে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার
৬৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ
মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা
বলেন, “টিকার অবিচ্ছিন্ন প্রাপ্যতা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিশ্রমের কারণে আমরা টিকা
নষ্ট না করেই সারাদেশের মানুষের কাছে তা পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।”
টিকা সংরক্ষণে কোল্ড চেইন
এবং আল্ট্রা-কোল্ড চেইন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, টিকা পৌঁছে দেওয়া, উপাত্ত ব্যবস্থাপনায়
সহায়তা দেওয়া এবং টিকাদানের জন্য সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে সহায়তা দেওয়ার কথা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
আগামী দিনেও ইউনিসেফ বাংলাদেশের
পাশে থাকবে জানিয়ে এ সংস্থার প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি
এবং টিকার ন্যায়ভিত্তিক সরবরাহ বজায় থাকলে কী অর্জন করা যেতে পারে বাংলাদেশের কোভিড-১৯
টিকা গ্রহণ এবং টিকাদান অব্যাহত রাখার সক্ষমতাই তার প্রমাণ।”
বংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচির
প্রশংসা করে তিনি বলেন, যেভাবে দ্রুততার সঙ্গে এবং নিরাপদে দেশের সব এলাকার মানুষকে
টিকা দেওয়া হয়েছে, তার ভাষায় তা ‘অসম্ভবের চেয়ে কম কিছু নয়’।
বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার প্রতিনিধি ডা. বারদান জং রানা বলেন, “জনগোষ্ঠীর ৬৯ শতাংশকে ইতোমধ্যে পূর্ণ
ডোজ টিকাদান সম্পন্ন করা বাংলাদেশ ২০২২ সালের জুনের মধ্যে ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকাদানের
যে বৈশ্বিক টার্গেট, তা অর্জনের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে।”
কোভ্যাক্সের সহায়তা ছাড়া
এই ‘সাফল্য’ সম্ভব হত না বলে মনে করেন বারদান জাং। তিনি বলেন, টিকাদানের চলমান গতি
মহামারীর জরুরি পরিস্থিতির অবসান দেখার আশা জাগাচ্ছে।
তবে সব জায়গায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে
না আসা পর্যন্ত যে ‘মহামারীর শেষ হয়েছে’ বলা যাবে না, সে কথা মনে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন
বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি।