মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বুধবার ১০৭ রানে জিতেছে মোহামেডান। ২৪৪ রানের পুঁজি গড়ে আবাহনীকে তারা আটকে রাখে স্রেফ ১৩৭ রানে।
সিটি ক্লাবের বিপক্ষে ১২৮ রানের ইনিংস খেলা রুমানা এবার খেলেন ৮ চারে ৫৮ রানের ইনিংস। ব্যাট হাতে ছন্দে থাকা জেসিয়া অল্পের জন্য করতে পারেননি টানা তৃতীয় ফিফটি। এক ছক্কা ও ৮ চারে ৪৭ বলে ৪৮ রান করে হন রানআউট। ৬ চারে ৪৪ রান আসে শায়েলার ব্যাট থেকে।
৩ চারে ২৯ রান করে অপরাজিত থাকা সালমা পরে বল হাতে নেন ৩ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক।
দল হারলেও বল হাতে নিজের কাজ ঠিকঠাকই করেন জাহানারা আলম। আবাহনীর এই পেসার ধরেন ৪টি শিকার।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় মোহামেডান। সেই ধাক্কা সামাল দেন জেসিয়া ও শারমিন সুপ্তা। তাদের ৬৯ রানের জুটিতে শক্ত ভিত পায় দল।
থিতু দুই ব্যাটারকে পরপর দুই ওভারে হারিয়ে চাপে পড়ে মোহামেডান। শায়েলা ও রুমানার ১২৩ বল স্থায়ী ১০৩ রানের জুটিতে কাটিয়ে ওঠে সেই ধাক্কা।
শায়েলাকে বোল্ড করে জমে যাওয়া এই জুটি ভাঙেন জাহানারা। পরের ওভারে তিনিই রুমানার স্টাম্প এলোমেলো করে দেন।
শেষ দিকের ব্যাটারদের নিয়ে দলের রান বাড়ান সালমা।
রান তাড়া করতে নেমে খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় আবাহনী। পরে দ্রুত বিদায় নেন আরেক ওপেনারও। ১৬ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে কিছুটা টানেন জিন্নাত অর্থি ও সুশমা দেবি।
২৮ রান করা সুশমাকে কট বিহাইন্ড করে ৬২ রানের জুটি ভাঙেন সালমা। পরে তার অফ স্পিনেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন আবাহনীর ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪০ রান করা অর্থি। ১০৪ বলের ইনিংসে তার চার চারটি।
এরপর শুধু উইকেট ধরে রাখার জন্যই খেলে আবাহনী। তাতে পেতে হয় বড় হারের তেতো স্বাদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৪৪/৮ (শামীমা ৬, শারমিন ২৮, জেসিয়া ৪৮, শায়েলা ৪৪, রুমানা ৫৮, সালমা ২৯*, সোহেলি ০, শারমিন ৫, তাজিয়া ১১, জেসি ১*; জাহানারা ১০-২-৪৫-৪, শানু ৬-০-৩৮-১, সাবেকুন ১০-০-৪৪-০, ফাহিমা ১০-০-৪৭-১, আশা ৮-১-৩৬-১, ইশমা ৬-০-৩৪-০)
আবাহনী লিমিটেড: ৫০ ওভারে ১৩৭/৮ (শারমিন ০, ইশমা ১১, অর্থি ৪০, সুশমা ২৮, ফাহিমা ৩, তাজ ১৬*, জাহানারা ৭, মন্টি ১২, আশা ১৩, সাবেকুন ২*; জেসিয়া ২-১-১০-১, তাজিয়া ২-০-৬-০, সালমা ১০-১-২৫-৩, রুমানা ১০-৪-১৪-০, শায়েলা ৭-০-২১-০, সোহেলি ১০-১-৩২-২, জেসি ৯-২-২৭-০)
ফল: মোহামেডান ১০৭ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: সালমা খাতুন
মিরপুর প্রমীলা-ইন্দিরা রোড
১১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন নুসরাত জাহান। ছবি: বিসিবি।
আরও একবার একশ রানের নিচে গুটিয়ে গেল মিরপুর প্রমীলা ক্রিকেট ক্লাব। কোনো উইকেট না হারিয়ে সহজ জয় তুলে নিল ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্র।
বিকেএসপির এক নম্বর মাঠে ইন্দিরা রোডের জয় ১০ উইকেটে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা মিরপুর প্রমীলা দলকে ৬৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে তারা জয় তুলে নেয় ১৩.২ ওভারেই।
প্রতিপক্ষকে অল্পতে থামানোর কারিগর নুসরাত জাহান। ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেওয়া এই অফ স্পিনারই হন ম্যাচ সেরা। ৩ উইকেট প্রাপ্তি আলিফা হোসেন মাইশার।
রানের খাতা খোলার আগে উইকেট হারায় মিরপুর প্রমীলা। এরপর নিয়মিত বিরতিতে সাজঘরে ফিরতে থাকে তাদের ব্যাটাররা। দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেন দলটির স্রেফ দুইজন ব্যাটার। যার মধ্যে সর্বোচ্চই ১৮। বাকিদের মধ্যে ৫ রান পার করতে পারেননি কেউ।
তাদের মোট রানের প্রায় অর্ধেকই এসেছে অতিরিক্ত থেকে, ২৭। তা না হলে, পঞ্চাশের আগেই শেষ হয়ে যেত দলটি।
জবাব দিতে নেমে কোনো বিপদ ছাড়াই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইন্দিরা রোড। হালিমাতুল সাদিয়া ৩ চারে ৩৮ করেন আর জামিলা আক্তার রুমির ব্যাট থেকে আসে ২ চারে ২১।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মিরপুর প্রমীলা ক্রিকেট ক্লাব: ৩৫.৪ ওভারে ৬৯ (প্রমা ০, পাপিয়া ১৮, জনি ২, শারমিন ৫, সাদিয়া আক্তার ১০, মাসুমা ১, লামিয়া ২, অর্পা ৩*, মৌসুমি ১, রাফা ০, ইয়াসমিন ০; ফেরদৌসি ৮-৩-৭-১, পারভিন ৩-১-১১-০, সাদিয়া আনোয়ার ৫-১-১৫-০, কনা ৪-০-১১-১, নুসরাত ৯.৪-৩-১১-৪, হালিমাতুল সাদিয়া ২-০-৫-০, মাইশা ৪-২-৭-৩)
ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্র: ১৩.২ ওভারে ৭০/০ (হালিমাতুল সাদিয়া ৩৮*, রুমি ২১*; ইয়াসমিন ৫.২-০-২৪-০, পাপিয়া ২-০-১০-০, শারমিন ২-০-৭-০, মৌসুমি ১-০-৬-০, লামিয়া ১-০-১২-০, জনি ২-০-১০-০)
ফল: ইন্দিরা রোড ১০ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: নুসরাত জাহান
গুলশান ইয়ুথ-সিটি ক্লাব
অলরাউন্ড পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন পারভিন খান। ছবি: বিসিবি।
দারুণ বোলিংয়ে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবকে অল্পতে আটকে দিলেন পারভিন খান। পরে রান তাড়ায় ঝিলিকের ফিফটি ও পারভিনের কার্যকর ইনিংসে সহজ জয় তুলে নিল সিটি ক্লাব।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে সিটি ক্লাবের জয় ৮ উইকেটে। প্রতিপক্ষকে ১৪৮ রানে থামিয়ে দিয়ে ৬৯ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় তারা।
২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন পারভিন। পরে ৩ চারে ৩৫ রান করে ফেরেন দলের জয় সঙ্গে নিয়ে। ম্যাচ সেরা তিনি ছাড়া আর কে! ১০ চারে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ঝিলিক।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অতি সাবধানী শুরু করে গুলশান ইয়ুথ। তাদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ১৬তম ওভারে, তাদের রান তখন স্রেফ ২৪।
এরপর নুজহাত তাসনিয়া টুম্পা দ্রুত কিছু রান বাড়ান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন তিনিই। তার ৩৯ বলের ইনিংসে চার ৬টি।
বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু শাহানাজ পারভিন পার করতে পারেন ২০ রান।
রান তাড়ায় সিটি ক্লাবের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৩০ রানে। পরে দ্রুত আরেকটি উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে তারা।
এরপর দারুণ ব্যাটিংয়ে অবিচ্ছিন্ন ৯৮ রানের জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ঝিলিক ও পারভিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
গুলশান ইয়ুথ ক্লাব: ৫০ ওভারে ১৪৮/৮ (মিশু ১৬, আইভি ১৩, টুম্পা ৩৩, শাহানাজ ২৩, পায়েল ৮, খাদিজা তুল কুবরা ৭, শিখা ৫, আনিশা ১২*, বৃষ্টি ১, সোমা ৫*; সুরাইয়া ১০-২-৩৭-০, ফাতেমা ১০-১-১৪-১, মুরশিদা ১০-১-৩০-১, কাকলি ১০-১-৩৮-২, পারভিন ১০-২-২৫-৪)
সিটি ক্লাব: ৩৮.৩ ওভারে ১৪৯/২ (অচেনা ১২, ঝিলিক ৬৮*, সাদিয়া ৬, পারভিন ৩৫*; শিখা ৮-১-৩০-০, খাদিজা তুল কুবরা ৯.৩-৩-২৪-০, বৃষ্টি ৫-০-২৬-০, আনিশা ১০-১-২৭-১, সোমা ৫-০-৩২-০, পায়েল ১-০-৮-০)
ফল: সিটি ক্লাব ৮ উইকেটে জয়
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: পারভিন খান