বিবিসি জানিয়েছে, আড়াই কোটি বাসিন্দার শহরটিতে স্থানীয় সময় বুধবার প্রথম প্রহর থেকে লকডাউনের নিয়মকানুন শিথিল হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষই এখন অবাধে চলাচলের সুযোগ পাচ্ছেন।
তবে শহরটির সাড়ে ৬ লাখ বাসিন্দাকে আরও কিছুদিন ঘরবন্দি থাকতে হবে।
বিধিনিষেধ শিথিল হলেও চীনের ‘শূন্য কোভিড’ নীতি বজায় আছে এবং যাদের দেহেই কোভিড শনাক্ত হচ্ছে, তাদেরকে হয় কোয়ারেন্টিনে নয়তো হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি আক্রান্তরা যেখানে থাকতেন, সেখানে ফের লকডাউন দেওয়ার নিয়মও চালু থাকছে।
ছবি রয়টার্সের
“দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই দিনটির স্বপ্ন দেখেছিলাম। অনেকে অনেক ত্যাগ করেছেন। অনেক কষ্টে এই দিন এসেছে, আমাদের এটিকে সযত্নে লালন ও রক্ষা করতে হবে। যে শহরের সঙ্গে আমরা পরিচিত এবং মিস করছিলাম, সেই সাংহাইয়ে ফের স্বাগতম,” সাংবাদিকদের বলেন সাংহাই সরকারের মুখপাত্র ইন জিন।
লকডাউনে শহরটির অনেক বাসিন্দার আয় কমেছে; অনেককেই খাবার সংগ্রহে এবং দীর্ঘ বিচ্ছিন্নবাসের সঙ্গে মানসিকভাবে মানিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হয়েছে।
কর্মীরা কারখানা থেকে দূরে থাকায় কিংবা কারখানায় অবস্থান করলেও কোভিড ও শনাক্তকরণ প্রটোকল মেনে ‘ক্লোজ লুপে’ কাজ করায় পশ্চিমা গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর টানা বিধিনিষেধের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় বুধবার থেকে সব ধরনের গণপরিবহন চালু হয়েছে; বড় বড় দোকানগুলোকে ধারণক্ষমতার ৭৫ শতাংশ নিয়ে খুলতে বলা হয়েছে। অবশ্য সিনেমা হল, জাদুঘর ও জিমনেসিয়াম বন্ধই থাকছে। অধিকাংশ শিশুকে স্কুলে মুখোমুখি ক্লাসেও যেতে হবে না।
এখনকার নিয়ম অনুযায়ী, নিজের বাড়ির আঙ্গিনা বা ভবন ছাড়তে এবং বেশিরভাগ স্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাংহাইয়ের বাসিন্দাদের ‘সবুজ স্বাস্থ্য কোড’ দেখাতে হবে।
ছবি রয়টার্সের
গণপরিবহনে শহরে ঘুরতে এবং ব্যাংক, মলসহ বিভিন্ন জায়গায় ঢুকতে ইচ্ছুকদেরকে দেখাতে হবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা পিসিআর পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ সনদ।
সাংহাই থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য বিধিনিষেধ আগের মতোই থাকছে।
যারাই অন্য শহর থেকে ঘুরে আসবেন, শহরে ঢোকার পরপরই তাদেরকে ৭ থেকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।
অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে শহরটি ৫০ দফা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
কর্তৃপক্ষের নেওয়া নতুন ব্যবস্থার মধ্যে গাড়ি ক্রেতাদের কিছু কর কমানো, স্থানীয় সরকার বন্ড ইস্যু ত্বরান্বিত করা এবং ভবন প্রকল্পগুলোর দ্রুত অনুমোদনও স্থান পেয়েছে।