ক্যাটাগরি

ব্রিটেনে কসমেটিক সার্জারির বিজ্ঞাপনে কড়াকড়ি

এর মানে হল, স্তন সুডৌল করা কিংবা নাক খাড়া
করার মত মানুষের শারীরিক কাঠামোতে বদল আনা যায়- এমন কোনো পদ্ধতি নিয়ে এমনভাবে
বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না, যাতে আঠারো বছরের কম বয়সীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা
থাকে।

বিবিসি জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা টিভি ও সোশাল
মিডিয়া- দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

যাদের বয়স ১৮ হয়নি, তাদের বেলায় এ ধরনের
অস্ত্রোপচার বেআইনি। তবে বিজ্ঞাপন প্রচার নিয়ে এর আগে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না।

বয়স কম দেখাতে ত্বকের নিচে ইনজেকশন দিয়ে জেল
দেওয়া, দাঁত সাদা করার পণ্য এবং কেমিকেল পিলের মত পণ্যের বিজ্ঞাপনও এই বয়সসীমার
বিধিনিষেধে পড়বে।  

শারীরিক কাঠামো নিয়ে অস্বস্তিবোধ, মানসিক
স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি এ ধরনের অস্ত্রোপচারের সম্ভাব্য স্বাস্থ্য জটিলতা
এড়ানোর লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের কমিটি অফ অ্যাডভারটাইজিং প্র্যাকটিস বা সিএপি ওই
নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

২০১৮ সালে টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠানের মাঝে
একটি কসমেটিক সার্জারি ক্লিনিকে স্তন বড় করার বিজ্ঞাপন দেখানো হয়; বিজ্ঞাপন
নিয়ন্ত্রক সংস্থা পরে ওই বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ করে।

এবার আইটিভিতে নতুন ধারাবাহিক লাভ আইল্যান্ড
চলার মাঝেও এমন ঘটেছে। এরপরই অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে ১৭টি অভিযোগ জমা পড়ে; যার
একটি এসেছিল মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন থেকে।

বিজ্ঞাপনে একজন তরুণ নারীকে হেসে হেসে সুইমিং
পুলের পাশে নাচতে দেখা যায়; তারপর সৈকতে এবং বোটে করে ঘুরতে দেখা যায় তাকে।

বিজ্ঞাপনে একটি নেপথ্য কণ্ঠে বলা হয়, “এই
নারীরা মিয়া (এমআইএ) থেকে স্তন বড় করিয়েছে এবং তারা রোমাঞ্চিত।” 

মানসিক স্বাস্থ্যের
ক্ষতি

ল্যানচেস্টার ইউনিভার্নিতে বিজ্ঞাপনের
মনস্তত্ব নিয়ে মাস্টার্স কোর্সে পড়ান লেসলি হাল্লাম। তিনি বিবিসিকে বলেন, ”বিজ্ঞাপন
কাজ করে চাহিদা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে টার্গেট
করে গ্রাহকের মধ্যে চাহিদা জাগিয়ে তোলে। সেটা হতে পারে ফাস্ট ফুড, পোশাক অথবা
কসমেটিক সার্জারি।”

লেসলি হাল্লাম বলেন, এমনিতে আঠারো বছরের কম
বয়সীরা আইনত এই অস্ত্রোপচারে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কিন্তু বিজ্ঞাপন তাদের
মধ্যে বাসনা তৈরি করতে থাকে। এরপর প্রাপ্তবয়স্ক হলেই তারা এমন পদ্ধতি প্রয়োগে
আগ্রহী হয়ে ওঠে।

“আমার মনে হয় এসব বিজ্ঞাপনের কারণে আঠারো বছরের কম বয়সীদের মানসিক
স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিজের শরীর নিয়ে হীনমন্যতা গড়ে উঠছে, খাওয়ার প্রতিও
অনীহা দেখা দিচ্ছে।”

টেলিভিশনের পাশাপাশি রেডিওতেও এ ধরনের
বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।