একই সাথে এরিকোর বিরুদ্ধে ইমরানের করা পাল্টা আদালত অবমাননার আবেদন এবং তাদের দুই শিশুকে নিয়ে জাপানে যেতে এরিকোর আরেকটি আবেদনও নাকচ করে বৃহস্পতিবার আদেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।
আদালতে এরিকোর আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি, আহসানুল করিম ও মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে ইমরান শরীফের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আখতার ইমাম ও রাশনা ইমাম।
ইমরান ও এরিকোর তিন সন্তানের মধ্যে একজন আছে জাপানে। আদালতের আদেশে বাকি দুজন ঢাকায় তাদের মায়ের সঙ্গে আছে। আদালতের নির্দেশেই মায়ের জিম্মায় থাকা শিশুদের সঙ্গে বাবার দেখা করার সুযোগ রয়েছে।
তবে এ নির্দেশনা অমান্য করে ইমরান শরীফ জোর করে মাঝে মাঝেই শিশুদের নিয়ে বাইরে বেরিয়ে যান বলে এরিকোর অভিযোগ। সে কারণে গত ১৬ মে ইমরানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগটি করেছিলেন এরিকো।
অন্যদিকে ইমরানের অভিযোগ, আদালতের আদেশের পরও সন্তানদের সঙ্গে সে অনুযায়ী তাকে দেখা করতে দেওয়া হয় না। সে কারণে একই দিনে তিনি আদালত অবমাননার পাল্টা অভিযোগ করেন এরিকো নাকানোর বিরুদ্ধে।
ইমরান শরীফ, ফাইল ছবি
এদিকে গ্রীষ্মের ছুটিতে দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার সুযোগ চেয়ে ১৭ মে আপিল বিভাগে আরেকটি আবেদন করেছিলেন মা এরিকো নাকানো।
শুনানি শেষে তিনটি আবেদনই আদালত খারিজ করে দেয় বলে জানিয়েছেন এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির।
জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো।
এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।
মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গতবছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। তিনি হাই কোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলে বিচারক।
কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাই কোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সাথে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।
হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেয়।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের এক আদেশে বলা হয়, জাপানি মা নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি ইমরান শরীফের দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তার নিষ্পত্তি হবে পারিবারিক আদালতে।ওই সময় পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে। মায়ের সাথে আলোচনা করে বাবা শিশুদের সাথে দেখা করতে পারবেন।
পুরনো খবর
ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ নাকানো এরিকোর
আরও ২০ দিন জাপানি মায়ের কাছে থাকবে দুই শিশু
দুই শিশু তাদের জাপানি মায়ের কাছেই থাকবে
হাই কোর্টের রায়: নাকানো-ইমরানের দুই শিশু থাকবে বাবার জিম্মায়
