বৃহস্পতিবার থেকে উন্মুক্ত অর্থনীতির নিয়মে বাজারই মুদ্রা বিনিময় হার ঠিক করবে। ব্যাংকগুলো যে কোনো দরে ডলার বিক্রি করতে পারবে।
সর্বশেষ গত ২৯ মে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিনিময় হার ৮৯ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, বৃহস্পতিবার তাও তুলে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওপেন মার্কেট অনুযায়ী ডলারের দাম ঠিক হবে। এটা না করলে রেমিটেন্স কমে যাবে বলে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন। বাজারের উপর ছেড়ে দিলেও বাংলাদেশ মনিটরিং করবে।”
ডলারের বিপরীতে টাকার মান দীর্ঘদিন স্থিতিশীলই ছিল। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকে বিশ্বজুড়ে চাহিদা বাড়ায় পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। এর মধ্যে ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় খরচ বেড়ে যায়। তাতে ডলারের চাহিদাও বাড়তে থাকে। ফলে বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশের মুদ্রা টাকাও ডলারের বিপরীতে দর হারাতে থাকে।
শুধু আন্তঃব্যাংক লেনদেনেই ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হয়েছে ৩ শতাংশের বেশি। গত বছরের এপ্রিলে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। জুনে তা এক পয়সা বাড়লেও অগাস্ট থেকে টাকার মান দ্রুত কমতে থাকে।
চাহিদা বাড়ায় কাগুজে ডলারের দরও বাড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। বাজার সামলানোর চেষ্টায় কেবল মে মাসেই চার দফা টাকার মান কমানো হয়।
আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর ৯০ টাকার নিচে থাকলেও মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে খোলা বাড়ারে ডলারের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
ডলার নিয়ে অস্থিরতা কমাতে ২৬ মে নির্দিষ্ট দরে ডলার কেনাবেচা করতে সম্মত হয়। পরে ২৯ মে ডলারের বিনিময় হার ৮৯ টাকা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন সেই লাগাম খুলে দেওয়া হল।
ডলার বাঁচাতে বিলাসপণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি ব্যয় সঙ্কোচনের পথে হাঁটছে সরকার। অতি জরুরি প্রকল্প ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে অর্থায়নে সতর্কতা অবলম্বনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণও সীমিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
ডলারের বিপরীতে আরও সস্তা হল টাকা