নিয়মিত হাঁটাহাঁটি থেকে পায়ের পাতা ব্যথা
হওয়া অসম্ভব নয়। আবার জুতার মাপ মানানসই না হলেও অল্প হেঁটেই পায়ে ব্যথা হতে পারে।
তবে এই ব্যথাকে আমলে না নিয়ে দিনের পর দিন পার করে দেন অসংখ্য মানুষ।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্নায়ু-বিশেষজ্ঞ ও ‘ন্যাশনাল
অ্যাকাডেমি অফ স্পোর্টস মেডিসিন’য়ের প্রশিক্ষক কোরিনা আপারিসিও রিয়েল-সিম্পল ডটকম’য়ে
প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এর একটি সহজ সমাধান জানান, আর তা হল একটি রাবারের বল।
আপারিসিও বলেন, “রাবারের এই বল ‘ল্যাক্রোস
বল’ নামেও পরিচিত। একে ‘ফোম রোলার’য়ের মতো ব্যবহার করে নিজেই নিজের ‘মায়োফেইশল রিলিজ’
দেওয়া যায়।”
পায়ের তালুতে প্রায় ২০টি ভিন্ন ধরনের
পেশি থাকে যা চলাফেলা নিয়ন্ত্রণ, পায়ের ওপর শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে।
এই বল মাটিতে রেখে পায়ের পাতার নিচে চাপ
দিয়ে চারপাশে ঘোরালে এক প্রকার মালিশ করা হয় যা ওই পেশিগুলোর টান টান অবস্থাকে শিথিল
করে, পেশির স্থিতিস্থাপকতা এবং নড়াচড়ার ক্ষমতা বাড়ায়।
এই পদ্ধতি ব্যবহারের কোনো ঝুঁকি নেই বললেই
চলে।
আপারিসিও বলেন, “পায়ের তালুতে যদি দীর্ঘদিন
ব্যথা অনুভব হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে ব্যথা কালেভদ্রে দেখা দিলে
এবং মৃদু মাত্রার হলে এই বল দিয়ে পায়ের তালু মালিশ করতে পারেন।”
মালিশ করার পদ্ধতি
রাবারের বল দিয়ে পায়ের পাতার ব্যথা দূর
করার জন্য আগে জানতে হবে কোনো এবং কীভাবে ব্যথার সৃষ্টি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার পা-বিষয়ক
বিশেষজ্ঞ ডা. নাজওয়া জাভেদ একই প্রতিবেদনে বলেন, “বেশিরভাগ সময় পায়ের পাতার ঢেউয়ের
মতো বাঁকানো অংশে ব্যথা হয়। এর কারণ হল একটি জটিল ‘লিগামেন্ট’ যার নাম ‘প্ল্যান্টার
ফ্যাইশল ব্যান্ড। ‘গ্যাসট্রোক’ পেশি আর ‘আকিলিস টেনডন’য়ের বর্ধিতাংশ এই ‘লিগামেন্ট’।”
এটি পায়ের গোড়ালির হাড়ের নিচের অংশটি
আবৃত রাখে এবং তালুর বাঁক ধরে রাখে। যে কারণে পায়ের পাতা সামনের দিকে বাঁকা হতে পারে।
হাঁটাহাঁটির কারণে এটি আঁটসাঁট ও শক্ত হতে থাকে। যে কোনো জুতা পরে হাঁটলে এমনটা হয়।
“রাবারের বল দিয়ে পায়ের তালুর বাঁকানো
অংশটি মালিশ করলে ‘টেনডন’ ও ‘লিগামেন্ট’ আরাম পায় এবং শিথিল হয়,” বলেন ডা. জাভেদ।
তিনি আরও বলেন, “বসে কিংবা দাঁড়িয়ে এই
বল দিয়ে মালিশ করতে পারেন। বলের নিচের সমতল শক্ত হতে হবে। পায়ের পাতা চারভাগে ভাগ করে
নিয়ে প্রতিভাগে আলাদাভাবে মালিশ করতে হবে সামনে পিছনে ও ডানে বামে। ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড
সময় দিতে হবে প্রতি পায়ের পেছনে। যেখানে ব্যথা বেশি সেখানে বেশি সময় ব্যয় করতে হবে।
চাপ দিতে হবে আলতোভাবে। ব্যথাযুক্ত স্থানে চাপ দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে, সহ্যের
বাইরে চলে যায় এমনভাবে চাপ দেওয়া যাবে না।”
আপারিসিও বলেন, “রাবারের ‘ল্যাক্রোস বল’
না থাকলে বা কিনতে না চাইতে গলফ বল, বেইজ বল, টেনিস বল, ফোম রোলার ইত্যাদি দিয়েও কাজ
চালানো যাবে। গোল বোতল বা কৌটাও ব্যবহার করা যাবে। ফোম রোলার বেশ নরম ফলে পায়ের পাতায়
মুদৃ চাপ ফেলে। আর শক্ত বল চাপ প্রয়োগ করবে বেশি। কোনটা ব্যবহার করবেন তা নির্ধারণ
করতে নিজের শরীরের ইঙ্গিত বুঝতে হবে।”
আরও পড়ুন
নিজের যত্ন নিতে গিয়ে আর্থিক বিপর্যয় এড়াতে করণীয়