১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার শ্রীলঙ্কা
সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটে হাবুডুবু খাচ্ছে। বিদেশি মুদ্রার ঘাটতির কারণে অতিপ্রয়োজনীয়
জ্বালানি ও ওষুধসহ দেশটির আমদানি মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারীতে দেশটির লাভজনক পর্যটন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়ার
পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো অতি গুরুত্বপূর্ণ রেমিটেন্সেও ভাটা পড়ে, একই সময় কর হ্রাসের
সরকারি সিদ্ধান্তে রাজস্ব আদায় কমে যায় আর বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ায় বিদেশি মুদ্রার
রিজার্ভ দ্রুত ফুরিয়ে গিয়ে গভীর সংকটে পড়ে যায় দেশটি।
এমন একটি সময়ে দ্বীপদেশটিতে সফর করা নৈতিকভাবে ঠিক হবে কি-না,
কিছুদিন আগে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা। শেষ পর্যন্ত
তারা সফরে গেছে। শুক্রবার সেখানেই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ফিঞ্চ বলেন, কঠিন পরিস্থিতিতে
থাকা শ্রীলঙ্কার মানুষের জন্য আনন্দের উৎস হতে চান তারা।
“আমরা এখানে ক্রিকেট খেলতে এসেছি এবং আশা করি…শ্রীলঙ্কার
মানুষকে কিছু আনন্দ ও বিনোদন দিতে পারব।”
“সফর করার জন্য দারুণ জায়গা এটি। এখানকার মানুষের আতিথেয়তা,
বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ এবং ক্রিকেটের প্রতি তাদের ভালোবাসা অবিশ্বাস্য।”
শ্রীলঙ্কায় দুটি টেস্ট, পাঁচটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি
খেলবে অস্ট্রেলিয়া। আগামী মঙ্গলবার টি-টোয়েন্টি দিয়ে রাজধানী কলম্বোয় কৃত্রিম আলোর
নিচে শুরু হবে দুই দলের লড়াই। পরের দুটি ম্যাচ বুধবার ও ১১ জুন। কিন্তু যে দেশের মানুষ
বর্তমানে দৈনিক ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না, সেখানে এভাবে ম্যাচ আয়োজন কতটা যৌক্তিক
বা সম্ভব, সেটা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
ম্যাচগুলো তাই দিনে আয়োজনের বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমের
খবর। ফিঞ্চ অবশ্য বললেন, এই বিষয়ে এখনও কিছুই জানেন না তিনি।
আগামী ১৪ ও ১৬ জুন প্রথম দুটি ওয়ানডে হবে ক্যান্ডিতে। পরের
তিনটি হবে ১৯, ২১ ও ২৪ জুন, কলম্বোয়। এরপর প্রথম টেস্ট শুরু হবে ২৯ জুন এবং পরেরটি
৮ জুলাই।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক হলেও, লঙ্কানদের পারফরম্যান্সে
এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন না ফিঞ্চ। তার মতে, দুই দলের সিরিজটি হবে হাড্ডাহাড্ডি
লড়াইয়ের।
“তাদের টপ অর্ডারে আছে কুসল (মেন্ডিস), যে কিনা নিজের দিনে
একাই প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। আর হাসারাঙ্গা তো দুই বছর ধরে টি-টোয়েন্টিতে অবিশ্বাস্য
ফর্মে আছে।”
“তাদের বিপক্ষে কয়েকটি জমজমাট লড়াইয়ের সিরিজ খেলেছি আমরা…তারা
খুবই ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ।”